গ্রামের সংবাদ ডেস্ক : ড্রাগন ব্লাড গাছ। ইয়েমেনের উপকূলে আরব সাগরে সুকাত্রা দ্বীপের গাছ এটি। গাছটি দেখতে বেশ অদ্ভুত। গাছটি প্রায় ৩২ ফুট লম্বা হয়। হঠাৎ করে গাছগুলো দেখলে মনে হতে পারে বৃহৎ আকৃতির ব্যাঙের ছাতা। বছরে একবার ফুল দেয়। উপযুক্ত পরিবেশে ড্রাগন ব্লাড ট্রি কয়েকশ বছর বাঁচতে পারে। গাছের বৃদ্ধি খুবই ধীরগতিতে হয়। ধারণা করা হয়, বহুকাল আগের ড্রাগনের রক্ত থেকে এই গাছের উৎপত্তি এবং সে অনুযায়ী এর নামকরণ!

ভৌগোলিক পরিবেশ ও বিচিত্র ধরনের উদ্ভিদের কারণে সুকাত্রা দ্বীপটি ‘এলিয়েন আইল্যান্ড’ বা ‘ভিনগ্রহবাসীদের দ্বীপ’ নামে পরিচিত। আর এই দ্বীপেরই অন্যতম আকর্ষণ ড্রাগন ব্লাড গাছ।

ড্রাগন ব্লাড গাছের বিভিন্ন অংশ হোমিওপ্যাথির কাজে লাগে যেমন-গাছের মূলের কষ টুথপেস্ট ব্যবহারে লাগে। এ গাছের গভীর লাল আঠালো পদার্থ রং তৈরিতে ও বার্নিশের কাজে ব্যবহৃত হয়। ভেষজ গুণাগুণও রয়েছে। স্থানীয় লোকজনরা সর্বরোগের চিকিৎসায় এই আঠা ব্যবহার করে।

প্রচলিত ধারণা মতে, বহুকাল আগের ড্রাগনের রক্ত থেকে এই গাছের উৎপত্তি। এ গাছের গভীর লাল আঠালো পদার্থ থাকে , যা দেখে মনে হয় রক্ত ঝরছে। এই গাছে ছোট কুলের মতো টকটকে লাল রঙের ফল হয়। গবাদি পশুকে স্বল্প পরিমাণে তা খাওয়ালে তাদের স্বাস্থ্যের উল্লেখজনক উন্নতি হয়। তবে বেশি খেলে স্বাস্থ্যহানিও হতে পারে।

গাছের গুঁড়ি থেকে ঘন লাল রঙের আঠা বের হয় যা বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধ এবং রং তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ৬০ খ্রিস্টাব্দেও বিভিন্ন দেশে এই আঠা রপ্তানি করা হত। মনে করা হয়, বিশ্বখ্যাত স্ট্র্যাডিভ্যারিয়াস বেহালা রাঙাতেও তা ব্যবহার করা হত। গাছের গাঢ় লাল রস থেকেই স্থানীয়দের মুখে গাছটির নাম হয় ড্রাগন ব্লাড ট্রি।

তবে দূষণের কারণে ক্রমেই এই বিরল গাছের অস্তিত্ব সঙ্কটময় হয়ে উঠেছে। আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তনের জেরে আর্দ্রতা হারাচ্ছে এই অঞ্চলের বাতাস। ফলে দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে ড্রাগন ব্লাড ট্রি-রা। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, আগামী ২০৮০ সালের মধ্যে পৃথিবীর বুক থেকে চিরবিদায় নেবে প্রকৃতির অন্যতম আদিম সন্তান।