অর্থ ও বাণিজ্য | তারিখঃ অক্টোবর ১৯, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 278754 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি-রপ্তানির আড়ালে মুদ্রা পাচার ঠেকাতে এবার সব ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টকে (সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট) নজরদারিতে আনছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মুদ্রা পাচারের সন্দেহে তাদের সবার তালিকা করতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি।
আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানিকারক ছাড়াও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের অ্যাসোসিয়েশনকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে এনবিআর। ১৫ অক্টোবর এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনায় একই সঙ্গে আগামী এক মাসের মধ্যে যেসব আমদানি-রপ্তানিকারক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের তথ্য সফটওয়্যারের ডেটাবেইসে যুক্ত করতে ব্যর্থ হবেন, তাঁদের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, তথ্য সংগ্রহের পর এসব এজেন্টের তথ্য এনবিআরের ‘অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম’ সফটওয়্যারে এন্ট্রি দেওয়া হবে। এর ফলে কোন আমদানিকারকের কোন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট—তা সহজে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শনাক্ত করতে পারবে। ফলে ভুয়া বিল অব এন্ট্রি বা বিল অব এক্সপোর্টের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, বাণিজ্যিক আমদানির সঙ্গে জড়িত কোনো সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের তথ্য সফটওয়্যারের ডেটাবেইসে না থাকলে তিনি কোনো ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবেন না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্প্রতি রপ্তানির আড়ালে শতকোটি টাকা পাচারে একাধিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সম্পৃক্ততা নজরে আসে।
এনবিআরের নতুন উদ্যোগের ফলে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি-রপ্তানি অনেকটা কমে যাবে। আগে যেকোনো সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আমদানি-রপ্তানিকারকের নামে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারতেন। নতুন এ ব্যবস্থায় প্রত্যেক ট্রেডারের জন্য তিনজন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের নাম সফটওয়্যারের ডেটাবেইসে থাকবে। তাঁরা ছাড়া আর কেউ এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না।
চলতি বছরের মার্চ মাসে বন্ড সুবিধার আওতায় আমদানি করেন, এমন আমদানিকারকদের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সফটওয়্যারের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয় এনবিআর। এনবিআরের শুল্ক বিভাগের তথ্য অনুসারে দেশে বন্ড সুবিধার আওতায় তালিকাভুক্ত ৮ হাজার ৪২২ জন আমদানিকারক রয়েছেন। সব মিলিয়ে আমদানি-রপ্তানিকারকের সংখ্যা ২০ হাজারের ওপরে; এ ছাড়া ১০ হাজার নিবন্ধিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রয়েছেন।
এর আগে অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীরা মূলত সাতটি পন্থা বা কৌশল অনুসরণ করছেন বলে চিহ্নিত করেছিল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এগুলো হচ্ছে আমদানি পণ্যের মূল্য বেশি-কম (ওভার ইনভয়েসিং, আন্ডার ইনভয়েসিং) দেখানো, কম ঘোষণায় বেশি পণ্য রপ্তানি, বেশি ঘোষণায় কম পণ্য রপ্তানি, কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি, ভুয়া রপ্তানি এবং শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা পণ্য রপ্তানিতে জালিয়াতি।