নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যাংক ও আর্থিক খাত নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. সাইদ উল্লা, মো. মোশাররফ হোসেন, শহিদুল্লাহ মজুমদার ও ক্যাপ্টেন (অব.) হাবিবুর রহমান। তাঁরা ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় কর্মরত।

এর আগে ৮ জানুয়ারি একই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশের এই বিভাগ। এ নিয়ে ওই ঘটনায় মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে নতুন করে ইসলামী ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের সত্যতার তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সবাই ব্যাংকার এবং তাঁরা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে কর্মরত। তাঁরা ব্যাংকটিকে ধ্বংসের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে টালমাটাল করে সরকারকেও বেকায়দায় ফেলে দিতে চান।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছেন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীরা। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যাংকটি অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। সম্প্রতি এই ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা ব্যাংক সম্পর্কে মনগড়া তথ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ান। তাঁরা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং তাঁদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে গুজব ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করা।

গুজব ছড়ানোয় এর আগে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত আরও কিছু ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে ডিএমপি জানিয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই তথ্যের ভিত্তিতে আরও কিছু কর্মকর্তাকে সন্দেহের মধ্যে রেখে অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ইসলামী ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে কিছুসংখ্যক স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। পরে ব্যাংকটি যখন স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের হাত থেকে এস আলম গ্রুপসহ অন্যদের হাতে আসে, তখন থেকে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রটি ব্যাংকটিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা শুরু করে

ব্যাংকটি ধ্বংসের পাশাপাশি তাঁরা দেশের অর্থনীতিকে টালমাটাল করে বর্তমান সরকারকেও বেকায়দায় ফেলে দিতে চান। তাঁরা মূলত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সহযোগিতায় তাঁদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন, যা কখনোই কাম্য নয়। এই ঘৃণ্য অভিপ্রায় কখনোই সফল হবে না।

এর আগে ৮ জানুয়ারি রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে ডিবির সাইবার ক্রাইম বিভাগ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন মোহাম্মদ নুর ঊন নবী, মো. আফসার উদ্দিন রোমান, মো. আবু সাইদ সাজু, মো. স্বাধীন মিয়া ও মো. আব্দুস সালাম। গুলশান থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।