জেলার খবর, নীলফামারী, রংপুর বিভাগ | তারিখঃ নভেম্বর ২০, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 3726 বার
মোঃ বাদশা প্রমানিক নীলফামারী প্রতিনিধিঃ তিস্তার জেগে উঠা চরে ব্যাপক হারে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ হচ্ছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ৬টি (ঝুনা গাছ চাপানি, খাঁলিসা চাঁপানি, গোয়াবাড়ি, টেপা খড়িবাড়ি, পূর্ব সাতঁনাই পশ্চিম সাতঁনাই) ইউনিয়নে ভেসে উঠা সব চরে, পলি ভেসে আসা বেলে মাটিতে স্বল্প খরচে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করছে ওই এলাকার কৃষকরা।
এই ফসল গুলোর মধ্যে একটি লাভজনক ফসল হচ্ছে বীঁজের বাদাম চাষ। এক বিঘা(৩০ শতাংশ)জমিতে বাদাম চাষ করতে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। উৎপাদিত বাদাম বিক্রি হয় ৩০থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এই সময় এখানে অন্যান্য ফসল থেকে এত লাভ হয় না। বন্যার সময় ভেসে আসা পলির কারণে ভুমি উর্বর থাকায় বেশি সার ও কীঁটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। বাদাম লাগা থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত বিভিন্ন সারের সংমিশ্রণ ২৫ কজি করে দুইবার প্রয়োগ করলেই হয়।
খাঁলিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর এলাকার বীঁজ বাদাম চাষী মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন,গত বছর আমি ২ বিঘা বীঁজ বাদাম চাষ করেছি এবং বাদাম পেয়েছি বিঘায় চার মন। বাজারে ৯ হাজার টাকা করে মন বিক্রি করি।খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয়েছে ২৯ হাজার টাকা। তাই এবারে ৫বিঘায় লাগিয়েছি। কিছুদিনের মধ্যে বাদাম তুলব এবং ওই জমিতে ভুট্টা লাগাবো। আশা করছি এবারও ঐরকম এই লাভ হবে।
একই এলাকার কৃষক জয়াতুল্লা বলেন,,আমি এর আগে কোন বার বীঁজ বাদাম চাষ করিনি।গতবছর হাবিবুর চাচার বাদাম চাষে লাভ দেখে আমি ২বিঘা চাষ করেছি। তাছাড়া দেখলাম ওই সময় অন্য পূর্ণ ফসল কোন লাগানোর সুযোগ না থাকায় বীঁজের জন্য বাদাম লাগাই। বাদাম তুলে রবিশস্য হিসেবে পিঁয়াজ লাগাবো।
একই গ্রামের কোরবান আলী বলেন, কয়েক বছর আগে শুধু আমরা দু চারজন জন কৃষক বীঁজ বাদাম চাষ করেছি।বীঁজ বাদাম চাষ লাভজনক হওয়ায় ও বাদাম তুলে অন্যান্য রবি মৌসুমের ফসল চাষ করার সুযোগ থাকায় বীঁজ বাদাম চাষে চাষীর সংখ্যা দিন দিন বারছে।
পাশের গ্রামের বীঁজ বাদাম চাষি মনাই বর্মন বলেন, বীঁজ বাদাম চাষ করা লাভজনক হলেও প্রত্যেক সপ্তাহে সেচ দিতে হয়। কোনভাবে সেচের খরচ কমাতে পারলে আমরা আরো লাভবান হতাম।
বীঁজ বাদাম লাগানোর উত্তম সময় ভাদ্র মাস। সাড়ে তিন থেকে চার মাসের মধ্যে বাদাম তুলা সম্ভব। বাদাম তুলে রবিশস্য গম, আলু, পিঁয়াজ, মরিচ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকমের মৌসুমী শাকসবজি চাষ করা সম্ভব।
এ সময় তিস্তার বুকে ও দু-ধারে শত শত একর জমি চর জেগে ওঠে। চরগুলো আগামী রবি মৌসুমের আগ পর্যন্ত অনাবাদী পড়ে থাকে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় যদি কৃষকদেরকে বীঁজ বাদাম চাষে উদ্বুদ্ধ করা যায়, তাহলে বাদামের বীঁজ দেশের চহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ মীর হাসান আলী (বান্ন) এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ৪ হেক্টর জমিতে বীঁজ বাদাম উৎপাদন করা হয়েছে।অল্প সংখ্যক কৃষককে বীজ বাদাম চাষের বীঁজ দেওয়া হয়েছে। বেলে-দোআঁশ মাটিতে বাদাম খুব ভালো হয়। আগামীতে বীঁজ বাদাম চাষে কৃষককে উৎসাহ দিতে কর্মসূচি বৃদ্ধি করা হবে।