নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ন্যাশনাল কার্ড স্কিম ‘টাকা-পে’ বাংলাদেশের জন্য একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটা করার কারণে পরনির্ভরশীলতা কাটবে। একটা হার্ড কারেন্সির ওপর আমাদের নির্ভরশীল হতে হবে না।’

বুধবার সকালে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় কার্ড স্কিম ‘টাকা-পে’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘টাকা-পে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার একটি পদক্ষেপ। আমরা ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তুলতে কাজ করছি। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার। আজকের ন্যাশনাল কার্ড স্কিম ‘টাকা-পে’ বাংলাদেশের জন্য একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতদিন আন্তর্জাতিক কোম্পানির মাধ্যমে কার্ড পরিচালনা হতো, অনেক খরচ হতো, অন্যের নিয়ন্ত্রণ থাকতো। এখন সব আমাদের দেশের মাধ্যমেই হবে। টাকা যেহেতু বাংলাদেশের। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে বাংলাদেশের। প্রায় সময় আন্তর্জাতিকভাবে বৈরী পরিবেশ হয়। সেক্ষেত্রে যেন আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাটা সচল থাকে, সেজন্যও এই পদক্ষেপ। এজন্য আমি অনেক বেশি আনন্দিত। এর পেছনে আরেকটা কারণ আছে, যেটা এখন বলার দরকার নেই।’

তিনি বলেন, ‘ক্যাশলেস সোসাইটি হলে দেশের দুর্নীতি হ্রাস হবে। দেশের মানুষ খুব সহজে ব্যবহার করতে পারবে। বাংলাদেশ কারো ওপর নির্ভরশীল হবে না, আমাদের টাকা আমরা লেনদেন করব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ন্যাশনাল কার্ড স্কিম চালু হলো। বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলছে, এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আমাদের অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থা হবে স্মার্ট, সরকারও হবে স্মার্ট। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা দারিদ্র্য ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার, সেটাই সরকার করে চলছে।’

তিনি বলেন, ‘ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলার উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। ২০২২ সালে বাংলাদেশ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। ১৩টি ব্যাংক সেবা দিচ্ছে, ২০২২ সালের শেষের দিকে একাউন্টের সংখ্যা ১৯ কোটি ছাড়িয়েছে।’

দেশে প্রচলিত কার্ডগুলো আন্তর্জাতিকভাবে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে কোনো বৈরী পরিবেশ হলেও যেন আমাদের অর্থনীতি সচল থাকে, সেজন্য নিজস্ব মুদ্রায় এ কার্ডের প্রচলন করেছি। এটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পরনির্ভরশীলতা কাটবে। বিশেষ করে, একটা হার্ড কারেন্সির ওপর আমাদের নির্ভরশীল হতে হবে না।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এটাকে সফল করার জন্য কাজ করছেন। তার টিম তার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেছে। অতি অল্প সময়ে এই কাজটি করা কঠিন ছিল। এই কাজটির মাধ্যমে প্রমাণ করে আমাদের ছেলেমেয়েরা কতটা মেধাবী।’

বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু আমাদের একটা স্বাধীন রাষ্ট্রই দিয়ে যাননি, স্বাধীন জাতি হিসেবে যেন আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে পারি সে ব্যবস্থা করে গেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে আমাদের দেশে যে কটি ব্যাংক ছিল মূলত ব্যাংকের মালিকরা ছিল পাকিস্তানি। যুদ্ধের সময় এরা সবাই পাকিস্তানে চলে যায়। বাংলাদেশে মাত্র একটি ব্যাংক ছিল, এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু সব ব্যাংক মালিকদের একত্রিত করে নতুন করে চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।’