ঝিকরগাছায় মহিলার চুল কাটার মামলায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছায় গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামে মহিলাকে বাড়ির পিলারে বেধে তার মুখে কালি লেপন, মারধোর ও চুল কেটে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিকরগাছা থানার এস আই (নিঃ) মহিদুল ইসলাম। মামলার অভিযোগ পত্র নম্বর ৪৫, তারিখ ২৭ মার্চ ২০২৫।
তদন্ত প্রতিবেদনে তিনি তদন্তে প্রাপ্ত স্বাক্ষ্য ও তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে ঘটনার পারিপার্শ্বিকতার আলোকে এবং মামলা সংশ্লিষ্ট যাবতীয় কাগজপত্র পর্যালোচনায় মামলার এজাহার নামীয় আসামি গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুল হোসেন (৩২), ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহিম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি (৩০), বেনিয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভার এর স্ত্রী রানী বেগম (৪৬), একই গ্রামের তবিবরের স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪২), আব্দুল হামিদের স্ত্রী আছিরণ বেগম (৪৮) এবং পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের স্ত্রী রহিমা বেগম (৫২) এই ৬ আসামির বিরুদ্ধে বাদিনিকে অবৈধভাবে আটক করতঃ মারপিট করে সাধারণ জখম, মাথার চুল কেটে অস্থায়ীভাবে চেহারার বিকৃতি ঘটানো, শ্লীলতাহানি, চুরি ও হুমকি প্রদর্শন করায় তাদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড আইনের ৩৪২/৩২৩/৩৫৫/৩৫৪/৩৭৯/৫০৬ ধারার অপরাধ প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণে প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়াও প্রতিবেদনে মামলার ১, ২, ৩ ও ৬ নম্বর আসামিদের গ্রেপ্তার পূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং ৪ ও ৫ নম্বর আসামিদ্বয় পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী/ক্রোকী পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য গত ২ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৪টার সময় বাদী বেনেয়ালি ব্রাক অফিসের সামনে তার সাবেক পুত্রবধুকে দেখতে গেলে উল্লেখিত আসামীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা সহ বাজে কথাবার্তা বললে তাদের কথায় প্রতিবাদ জানালে আসামিরা বাদিকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে জোরপূর্বক তাদের বাড়ির মধ্যে নিয়ে যায়। এরপর ঘরের বাইরের সিঁড়ির পিলারের সাথে অবৈধ ভাবে আটকে রেখে বাঁশ দিয়ে মারপিট করে বাদীর শরীরে বিভিন্ন জায়গায় নীলাফোলা জখম করে। একপর্যায়ে ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর আসামিগন ধারালো কাইচি দ্বারা বাদীর মাথার চুল কেটে চেহারার বিকৃতি ঘটায় এবং মুখে কালি মাখিয়ে দেয়। ১ নম্বর আসামি বাদীর শরীরের কাপড়চোপড় টানাহেঁচড়া করে শ্লীলতাহানি ঘটায় ও কাছে থাকা দেড় হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং এই ঘটনা কাউকে বললে বা মামলা করলে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় বাদী ঐ দিনই ৬ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ঝিকরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনার রাতেই ৪ জন আসামি গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। পরের দিন সারাদেশের টিভি, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন আছে।