ডেস্ক রিপোর্ট : দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে দাড়িয়েছে। প্রথমে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তা থেকে সরে এসে শেষ পর্যন্ত ২৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ অনুমতি দেয়া হয়েছে ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লোকজ ফ্যাশন ২০ টন, আর বাকি সব কটি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের প্রধান নিয়ন্ত্রককে চিঠি দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

যেসব প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেয়েছে সেগুলো হলো- আরিফ সি ফুডস, জারা এন্টারপ্রাইজ, সততা ফিশ ফিড, এস এ আর এন্টারপ্রাইজ, নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, রুপালী সি ফুডস লিমিটেড, লাকি এন্টারপ্রাইজ, টাইগার ট্রেডিং, রিপা এন্টারপ্রাইজ, জেবিএস ফুড প্রোডাক্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মাশফি অ্যান্ড ব্রাদার্স, মহিমা এন্টারপ্রাইজ, সেভেন স্টার ফিশ প্রসেসিং কোম্পানি লিমিটেড, রহমান ইমপেক্স, আসিফ ইমপেক্স, নোমান এন্টারপ্রাইজ, যমুনা অ্যাগ্রো ফিশারিজ, রুপালী ট্রেডিং করপোরেশন, সততা ফিশ, প্যাসিফিক সি ফুডস লিমিটেড, জেজে ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, বিশ্বাস ইন্টারন্যাশনাল, ক্যাপিটাল এক্সপোর্ট ইমপোর্ট অ্যান্ড কোম্পানি, অর্পিতা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, সুমন ট্রেডার্স, সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ, সততা ফিশ, আঁচল এন্টারপ্রাইজ, ২ এইচ ইন্টারন্যাশনাল, এমএপি ইন্টারন্যাশনাল, সরদার এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট, ইউভা ট্রেডিং, ফারিয়া ইন্টারন্যাশনাল, আসফা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, স্ট্যান্ডার্ড ফুড করপোরেশন, জেএস এন্টারপ্রাইজ, পদ্মা অ্যাগ্রো ফিশারিজ, ন্যাশনাল অ্যাগ্রো ফিশারিজ, মেসার্স আহনাফ ট্রেডিং, নাফিজা এন্টারপ্রাইজ, ডিপ সি ফিশারিজ লিমিটেড, মাসুদ ফিশ প্রসেসিং, আরকে ট্রেডার্স, বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজ, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ ও লোকজ ফ্যাশন।

ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদনের শেষ সময় ছিল গত সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত। নতুন ও পুরোনো সব আবেদনপত্র এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ইলিশ রপ্তানির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এর বিপরীতে দেয়া হয় আটটি শর্ত। শর্তে বলা হয়েছে, অনুমতির মেয়াদ কার্যকর থাকবে আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত।

যেসব শর্ত দিয়ে প্রতিবছর ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়, এবারো সেগুলোই রাখা হয়েছে। শর্তগুলো হচ্ছে বিদ্যমান রপ্তানিনীতির বিধিবিধান মানা, শুল্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ইলিশের কায়িক পরীক্ষা করানো এবং প্রতিটি চালান (কনসাইনমেন্ট) শেষে রপ্তানিসংক্রান্ত কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা। এছাড়া অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি না করা, অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তর না করা এবং অনুমোদিত রপ্তানিকারক ছাড়া ঠিকায় (সাব–কন্ট্রাক্ট) রপ্তানি না করার শর্তও থাকছে। বলা হয়েছে, সরকার যেকোনো সময় রপ্তানি বন্ধ করতে পারবে। সব সময়ই এসব শর্ত থাকে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ভারতে ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে এবার নেতিবাচক মন্তব্য করলেও গত শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন রবিবার অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ‘বৃহত্তর স্বার্থে এবং সর্বোচ্চ মহলের সিদ্ধান্তে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্তে বাহবা পেয়েছি। অনেক জায়গা থেকে বলা হয়েছে, ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা ওই দিন আরো বলেন, আবেগতাড়িত হয়ে (ইমোশনাল) কথা বলে লাভ নেই। বছরে উৎপাদন হয় ৫ লাখ ৩০ হাজার টন ইলিশ। তিন হাজার টন ইলিশ চাঁদপুর ঘাটের এক দিনের পরিমাণের চেয়ে কম। তা ছাড়া ইলিশ রপ্তানিতে বাণিজ্যিক সুবিধাও আছে। বৈদেশিক মুদ্রা আসবে। রপ্তানি না করলে চোরাচালান হয়।