সারাবিশ্ব ডেস্ক : ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর ইরান এই সিদ্ধান্তকে ‘ফিলিস্তিনের ন্যায়সংগ্রাম এবং গাজাবাসীদের জন্য একটি বড় বিজয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি পরোয়ানাটি ‘ঐতিহাসিক এবং সাহসী পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এটি নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জাতি, প্রতিরোধ শক্তি এবং তাদের সমর্থকদের জন্য একটি বড় সাফল্য। একই সঙ্গে, জায়নিস্ট শাসন এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের জন্য একটি পরাজয়।

তিনি আরো জানান, বহু দেশ আইসিসির স্বাধীনতা এবং এখতিয়ারকে স্বীকৃতি দিয়েছে, ফলে এই পরোয়ানা বাস্তবায়ন হলে, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্ট আইসিসি স্বীকৃত দেশগুলোতে প্রবেশ করলেই গ্রেপ্তার হতে পারেন।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) আইসিসি ঘোষণা করেছে যে তাদের প্রাথমিক চেম্বার ইসরাইলের চ্যালেঞ্জ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আদালত নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আইসিসির মতে, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্ট ‘ইচ্ছাকৃতভাবে এবং জেনে-শুনে গাজার বেসামরিক জনগণকে খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে বঞ্চিত করেছেন। এসব যা যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল।

এদিকে, ইরানের কৌশলগত কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের প্রধান কামাল খাররাজি আইসিসির এই সিদ্ধান্তকে ‘পশ্চিমাদের জন্য একটি কেলেঙ্কারি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, আইসিসি ইউরোপীয় সদস্যদের অবশ্যই এই রায় বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ব্যাখ্যা করতে হবে কেন তারা এতদিন এই ধরনের অপরাধীদের সমর্থন করেছে। তারা কী এই অপরাধী সরকারকে রাজনৈতিক, আর্থিক এবং সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে, নাকি অন্য পথে যাবে?

খাররাজি আরো বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো, যারা নিজেদের মানবাধিকার প্রবক্তা হিসেবে দাবি করে, তারা আসলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। তিনি গাজার যুদ্ধ এবং লেবাননের যুদ্ধের মাধ্যমে পশ্চিমাদের মুখোশ খুলে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

আইসিসির এই রায় ফিলিস্তিনিদের জন্য এক আশার আলো নিয়ে এসেছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো এবং বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরোধিতার কারণে এটি কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ আছে। তবুও, ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য এটি ন্যায়বিচারের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।