ক্যাম্পাস সংবাদ, শিক্ষাঙ্গন | তারিখঃ December 30th, 2024 | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 13387 বার
ঢাকা অফিস : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
এসময় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটার শোডাউন করতে দেখা যায়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, গত ২৪ ডিসেম্বর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মেহেদী হাসান হিমেলকে আহ্বায়ক ও শামসুল আরেফিনকে সদস্যসচিব করে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের ঘোষিত এই আহ্বায়ক কমিটিকে ‘অছাত্র, অনিয়মিত ও ছাত্রলীগ নিয়ে পকেট কমিটি’ আখ্যা দিয়ে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ছাত্রদলের বৃহৎ একটি অংশ। কমিটি ঘোষণার পর দফায় দফায় বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়ার ঘটনাও দেখা গেছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, প্রতিদিনের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। সংঘর্ষে জড়িত গ্রুপগুলোর মধ্যে লাঠিসোঁটা ব্যবহার করা হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংস্কার চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন ক্যাম্পাসের পরিবেশ এমন হয়ে গেছে যে, নিজেরাই আতঙ্কে থাকি। শুনেছি, কমিটি গঠন নিয়ে এই অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রয়োজন হলে তারা কেন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভ করুক, কিন্তু ক্যাম্পাসের শান্তি কেন নষ্ট করবে?’
এবিষয়ে পদবঞ্চিত সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিয়া রাসেল বলেন, ‘আমরা এমন কিছু করব না যেন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয়। মিছিলে যেসব লাঠিসোঁটা দেখেছেন এটা কাউকে মারার জন্য না। যারা কমিটিতে গিয়েছে তাদের সংকেত দেওয়ার জন্য। আমরা স্পষ্টভাবেই ম্যাসেজ দিয়েছি, তারা যেন নতুন করে কমিটি না দিলে ক্যাম্পাসে না আসে।’
জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘আমরা চাইলেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারি, কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে যাচ্ছি না। আসলে এর আগের কমিটিতে প্রায় তিনশো জন নেতাকর্মী ছিল। বর্তমান কমিটি সেই তুলনায় অনেক ছোট হওয়াতেই আমার দলের সহযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আমি এর সমাধান হিসেবে যত দ্রুত সম্ভব কমিটিতে বাকিদের অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি।’
এদিকে ক্যাম্পাসে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব আইডি কার্ড নিয়ে প্রবেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে পুলিশি নিরাপত্তা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা বিধানে আমরা বদ্ধপরিকর। ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ বিরাজ থাকবে এটাই শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা। আর তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেব।’