স্বপন বিশ্বাস, মাগুরা : আধুনিক চাযাবাদ ও ঘরবাড়ি নির্মানের ফলে, মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলায় খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন হচ্ছেনা রস ও গুড়। এ কারণে কমেছে গাছির সংখ্যাও।

গ্রামীণ সড়কে এখন আর আগের মতো খেজুর গাছের সেই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য চোখে পড়ে না। পৌষ থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত রস সংগ্রহের মৌসুম। এই তিন মাস গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা বিক্রি করেন গাছিরা। সাথে রস দিয়ে তৈরি গুড়-পাটালি বিক্রির ধুম চলে সমানে। রসের মৌসুমে গাছিরা পঞ্চাশ থেকে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা সচল হয়।

আজ থেকে ২০ বছর আগেও হেমন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে গাছ কাটার হিড়িক পড়ত শালিখা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। বেশ চড়া দামে ইটভাটার মালিকদের কাছে খেজুর গাছ বিক্রি করা, নতুন করে খেজুর গাছ রোপণ না করা এবং গ্রামীণ সড়কের সংস্কার কাজের কারণেও অনেক স্থানে খেজুর গাছ উজাড় হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। এছাড়া গুড় তৈরির জন্য জালানির অভাবও একটা অন্যতম কারণ। শালিখা উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়নের সেওজগাতি গ্রামের আবুল মিয়া বলেন, ৩০ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটতেছি, আগে এক সময় প্রায় ১শ গাছ কাটতাম কিন্তু এখন গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ও জালানি সংকট হওয়ায় ১০থেকে ২০টি গাছ তৈরি করি। এক ঠিলা রস বিক্রি করি ৩০০ টাকা এবং এক কেজি পাটালি ও ঝোলগুড় বিক্রি করি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা।

সাধন নামের এক গুড় ও পাটালি বিক্রেতার সঙ্গে কথা হলে জানান, খেজুরের রস পর্যাপ্ত না থাকায় এখন অধিকাংশ জায়গায় চিনি মিশ্রিত গুড়-পাটালি বিক্রি করা হয়।

কৃষিবিদ অভিজিৎ মন্ডল বলেন, সরকারি ভাবে বৃক্ষরোপণে খেজুর গাছ অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

শালিখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, আনুমানিক শালিখায় ২৬ হাজার খেজুর গাছ আছে। যা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। তাই গাছের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করতে সবাইকে খেজুর গাছ বেশি বেশি রোপণ করা প্রয়োজন।