লাইফ স্টাইল | তারিখঃ জুলাই ১২, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 10187 বার
সানজিদা আক্তার সান্তনা : কাঁঠাল পুষ্টি সমৃদ্ধ। এতে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী। কাঁঠালের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। নিম্নে কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
Google News গুগল নিউজে ভোরের কাগজের খবর পড়তে ফলো করুন
কাঁঠালের উপকারিতা
১. কাঁঠালে থাকা প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।
২. কাঁঠালে থাকা ভিটামিন সি চুল, দাঁত ও দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া ক্যান্সার ও টিউমারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
৩. কাঁঠালে থাকা ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৪. কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস আলসার, পাইলস ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং বার্ধক্য ও উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৫. কাঁঠালে রয়েছে পটাশিয়াম, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৬. কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৭. কাঁঠালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও বলিরেখা কমিয়ে তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। মুখে বলিরেখা পড়তে বাধা দেয়। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে সৃষ্টিকারী ফ্রি রেডিক্যাল প্রতিরোধ করতে লড়াই করে। যা ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী।
৮. কাঁঠালে থাকা সোডিয়াম ও পটাশিয়াম শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সকে ঠিক রাখে, যা উচ্চরক্তচাপ ও হার্টও ভালো রাখে।
৯. কাঁঠালে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি। এজন্যই কাঁঠাল খেলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া যায়।
১০. কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকায় হজমের সমস্যা দূর করে। যা হজমশক্তি বাড়ায়, পেট পরিষ্কার রাখে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
১১. কাঁঠালে থাকা ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড় মজবুত করে ও অস্টিওপোরসিস রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
১২. কাঁঠালে আয়রন থাকে, যা রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। রক্তাল্পতায় রোগীদের জন্য কাঁঠাল খুবই উপকারী যা দেহের রক্তস্বল্পতা দূর করে।
১৩. কাঁঠালে কোনো ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেই এবং ক্ষতিকারক ফ্যাটের পরিমাণ কম হওয়ায় ওজন বাড়ার খুব একটা আশঙ্কা থাকে না
১৪. টেনশন, নার্ভাসনেস ও বদ হজম কমাতে কাঁঠালে ভূমিকা অনেক।
১৫. দুগ্ধদানকারী মা তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
১৬. কাঁঠালে থাকা ম্যাঙ্গানিজ ও খনিজ উপাদান যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
১৭. কাঁঠালে থাকা ভিটামিন বি-৬ হৃদরোগের ঝুঁঁকি কমায়।
১৮. চিকিৎসাশাস্ত্র মতে প্রতিদিন ২০০ গ্রাম তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভধারণকৃত শিশুর সব ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়। গর্ভবতী মহিলারা কাঁঠাল খেলে তার স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থসন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। দুগ্ধদানকারী মা তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
১৯. ছয় মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয়। অন্যদিকে তার প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়।
২০. যে সমস্ত মানুষ মাছ, মাংস কম খায় তাদের জন্য আমিষের চাহিদা মেটাতে কাঁঠাল বিচি উৎকৃষ্ট খাবার।
কাঁঠাল খাওয়ার অপকারিতা
কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। কাঁঠালের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি কাঁঠালের উপকারিতা রয়েছে এখানে আলোচনা করব কাঁঠালের অপকারিতা সম্পর্কে। কাঁঠালের অপকারিতা নিচে উল্লেখ্য করা হলো জেনে নিন-
১. যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের কাঁঠাল খাওয়ায় কিছুটা বিধিনিষেধ আছে। কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি, তাদের কাঁঠাল না খাওয়াই ভালো। তাছাড়াও অধিক পরিমাণে কাঠাল খেলে তা বদহজম হতে পারে।
২. কাঁঠাল খাওয়ার পর দুধ খেলে পেট ফুলে যেতে পারে এবং ত্বকে ফুসকুড়ি আবার সাদা সাদা দাগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. কাঁঠাল খাওয়ার পরে আপনি যদি পেঁপে খেতে যান তাহলে মুখে বা শরীরে এলার্জি চুলকানির সমস্যা
৪. কাঁঠাল খাওয়ার পর যদি ঢেঁড়স খেয়ে থাকেন তাহলে এসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫. কাঁঠাল খাওয়ার পর পানি খেলে আপনার মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।