০১:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

বাঘারপাড়ার (আয়াপুর) নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেন অনিয়মের আঁতুড়ঘর !

নিউজ ডেস্ক

সাঈদ ইবনে হানিফ : যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আয়াপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেন অনিয়মের এক আঁতুড়ঘর।

বিদ্যালয়ের জমি, ঘর, শিক্ষার্থী, বিদ্যালয় পরিচালনার নিয়মনীতি সবই যেন চলছে কয়েকজন শিক্ষক কর্মচারীর এবং পরিচালনা কমিটির অদৃশ্য শক্তির বলে। একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শিক্ষক কর্মচারি ঠিক থাকলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল । তবুও চলছে । খবর নিয়ে জানা গেছে, রোস্তমপুর দেবীনগর কৈখালী আয়াপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ২০০৪ সালে।

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা ৮নং বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের আয়াপুর গ্রামে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠান টি সম্পর্কে এলাকাবাসীর তেমন কোন ধারনা নেই। তবে কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি জানিয়েছেন, এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে-৬ষ্ঠ, ৭তম, ৮ম, তিন ক্লাসে মোট মিলে ১৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে তাও অনিয়মিত। কয়েকজন বয়স্ক লোক জানিয়েছেন, এই স্কুলে কখন ক্লাস হয় কেউ জানে না। অভিযোগ রয়েছে, গত ১৮ মে ২০২৫ রোববার যশোর শিক্ষা বোর্ডের উপ পরিদর্শক কর্মকর্তা মোঃ ডালিম হোসেন, প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে আসেন।

এসময় ক্লাসে গিয়ে ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাংলা বইয়ের একটা বাংলা কবিতা পড়তে বলেলে তা ওই ক্লাসের কেউ এক লাইন কবিতা পড়তে পারেনি। স্থানীয়দের দাবী, এসব ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন জায়গা থেকে ম্যানেজ করে নিয়ে আসা হয়েছিল।

বিদ্যালয়টি নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের যা-সম্প্রতি, স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ডের নজরে আসে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অপ্রতুল হলেও শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি।

প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা: পরিদর্শনকালে নিম্নলিখিত তথ্য পাওয়া যায় । খাতা কলমে একশো ১০/১৫ জন হলেও বাস্তবে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা: ১৬/১৭ জন, তাও অনিয়মিত। এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক আছেন ৪ জন ,কর্মচারী সংখ্যা: ৫ জন । বিদ্যালয়ের আশেপাশে ১,হাজার গজের মধ্যে আরো ৪-৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা)।

স্থানীয় জনগণের অভিযোগ অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে এখানে কার্যত কোনো শিক্ষাদান কার্যক্রম নেই। আজ অফিসার আসার কথা শুনে যশোর সদরের রায়মানিক সহ কয়েকটি বিদ্যালয় থেকে ৫০/৬০জন শিক্ষার্থী ৯টি ইজিবাইকে ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। এছাড়া ও তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত যেসব অভিযোগসমূহ: রয়েছে তার মধ্যে, প্রতিষ্ঠানের নামে ৭৪ শতক জমি প্রতারণার মাধ্যমে লিখে নেওয়ার অভিযোগ যে বিষয়ে ৬টি মামলা চলমান রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করলেও বাস্তবে শিক্ষার কার্যক্রম প্রায় অনুপস্থিত। ওই উপ-পরিদর্শকের : পরিদর্শনকালে স্থানীয়রা উপস্থিত থেকে জানান, বিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রী নেই এবং এর কার্যক্রম সন্দেহজনক। তারা এসব বিষয়ে উপ-পরিদর্শকের কাছে বিস্তারিতভাবে অবগত করেন। প্রতিষ্ঠানটির বাস্তব কার্যক্রম, ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা, নিয়োগ ও অর্থনৈতিক লেনদেন ইত্যাদি বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।

প্রথমত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত । ২য় শিক্ষার্থী উপস্থিতি যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। ৩য়. সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলাসমূহের অগ্রগতি মনিটরিং করা। ৪র্থ. শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৭:০৮:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
২৮

বাঘারপাড়ার (আয়াপুর) নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেন অনিয়মের আঁতুড়ঘর !

আপডেট: ০৭:০৮:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

সাঈদ ইবনে হানিফ : যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আয়াপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেন অনিয়মের এক আঁতুড়ঘর।

বিদ্যালয়ের জমি, ঘর, শিক্ষার্থী, বিদ্যালয় পরিচালনার নিয়মনীতি সবই যেন চলছে কয়েকজন শিক্ষক কর্মচারীর এবং পরিচালনা কমিটির অদৃশ্য শক্তির বলে। একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শিক্ষক কর্মচারি ঠিক থাকলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল । তবুও চলছে । খবর নিয়ে জানা গেছে, রোস্তমপুর দেবীনগর কৈখালী আয়াপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ২০০৪ সালে।

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা ৮নং বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের আয়াপুর গ্রামে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠান টি সম্পর্কে এলাকাবাসীর তেমন কোন ধারনা নেই। তবে কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি জানিয়েছেন, এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে-৬ষ্ঠ, ৭তম, ৮ম, তিন ক্লাসে মোট মিলে ১৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে তাও অনিয়মিত। কয়েকজন বয়স্ক লোক জানিয়েছেন, এই স্কুলে কখন ক্লাস হয় কেউ জানে না। অভিযোগ রয়েছে, গত ১৮ মে ২০২৫ রোববার যশোর শিক্ষা বোর্ডের উপ পরিদর্শক কর্মকর্তা মোঃ ডালিম হোসেন, প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে আসেন।

এসময় ক্লাসে গিয়ে ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাংলা বইয়ের একটা বাংলা কবিতা পড়তে বলেলে তা ওই ক্লাসের কেউ এক লাইন কবিতা পড়তে পারেনি। স্থানীয়দের দাবী, এসব ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন জায়গা থেকে ম্যানেজ করে নিয়ে আসা হয়েছিল।

বিদ্যালয়টি নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের যা-সম্প্রতি, স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ডের নজরে আসে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অপ্রতুল হলেও শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি।

প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা: পরিদর্শনকালে নিম্নলিখিত তথ্য পাওয়া যায় । খাতা কলমে একশো ১০/১৫ জন হলেও বাস্তবে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা: ১৬/১৭ জন, তাও অনিয়মিত। এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক আছেন ৪ জন ,কর্মচারী সংখ্যা: ৫ জন । বিদ্যালয়ের আশেপাশে ১,হাজার গজের মধ্যে আরো ৪-৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা)।

স্থানীয় জনগণের অভিযোগ অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে এখানে কার্যত কোনো শিক্ষাদান কার্যক্রম নেই। আজ অফিসার আসার কথা শুনে যশোর সদরের রায়মানিক সহ কয়েকটি বিদ্যালয় থেকে ৫০/৬০জন শিক্ষার্থী ৯টি ইজিবাইকে ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। এছাড়া ও তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত যেসব অভিযোগসমূহ: রয়েছে তার মধ্যে, প্রতিষ্ঠানের নামে ৭৪ শতক জমি প্রতারণার মাধ্যমে লিখে নেওয়ার অভিযোগ যে বিষয়ে ৬টি মামলা চলমান রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করলেও বাস্তবে শিক্ষার কার্যক্রম প্রায় অনুপস্থিত। ওই উপ-পরিদর্শকের : পরিদর্শনকালে স্থানীয়রা উপস্থিত থেকে জানান, বিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রী নেই এবং এর কার্যক্রম সন্দেহজনক। তারা এসব বিষয়ে উপ-পরিদর্শকের কাছে বিস্তারিতভাবে অবগত করেন। প্রতিষ্ঠানটির বাস্তব কার্যক্রম, ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা, নিয়োগ ও অর্থনৈতিক লেনদেন ইত্যাদি বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।

প্রথমত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত । ২য় শিক্ষার্থী উপস্থিতি যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। ৩য়. সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলাসমূহের অগ্রগতি মনিটরিং করা। ৪র্থ. শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন