১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

বেনাপোল স্থলবন্দর : আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত, হাজারো ট্রাক দাঁড়িয়ে ওপারে

নিউজ ডেস্ক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে লিংক সার্ভিস (অনলাইন সিস্টেম) কাজ না করায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত হচ্ছে। যার ফলে হাজারো ট্রাক দাঁড়িয়ে ভারতের পেট্রাপোলে।

সবশেষ মঙ্গলবার (৬ মে) ওপারের বন্দরে দীর্ঘ হয়েছে ট্রাকের সারি। ফলে বাংলাদেশের অনেক শিল্পকারখানায় কাঁচামালের সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া রপ্তানি পণ্যও যথাসময়ে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। মূলত ২৮ এপ্রিল থেকে চলছে এই পরিস্থিতি। এতে পেট্রাপোল বন্দরে পণ্যজট দেখা দিয়েছে।

ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় দেড় হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে পেট্রাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে।

তিনি বলেন, পেট্রাপোল বন্দরের কাস্টমস ও বন্দরের অনলাইন সিস্টেমের লিংক সার্ভিস দিয়ে থাকে টাটা কোম্পানি। ২৮ এপ্রিল দুপুরে ঝড়ের পর লিংক সমস্যা দেখা দিয়েছে। টাটার কলকাতা অফিস সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। এখন দিল্লির ডিজি সিস্টেম মনিটর করছে। কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ অনলাইন সিস্টেমের বিকল্প হিসেবে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কিছু পণ্য ছাড় করছে।

বেনাপোল চেকপোস্টের কার্গো সূত্রে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৯৯০ ট্রাক পণ্য। আর রপ্তানি হয়েছে ১৬১২ ট্রাক পণ্য। ৯ দিনে গড়ে ৩৩০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল বন্দরে এসেছে।

এরপর লিঙ্ক সমস্যায় ২৯ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত চারদিনে (মাঝে দুদিন ছুটি) মাত্র ২৩২ ট্রাক পণ্য এসেছে। আর রপ্তানি হয়েছে ৭৫১ ট্রাক পণ্য। আমদানি হয়েছে গড়ে ৫৮ ট্রাক পণ্য।

বেনাপোল কাস্টমসের কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, পেট্রাপোল বন্দরে ইন্টারনেট লিংক না থাকায় তারা অনলাইন সিস্টেমে কাজ করতে পারছে না। অনলাইনের বিকল্প হিসেবে ট্যাবে ওয়াইফাই দিয়ে নামমাত্র কার্যক্রম চালু রেখেছে পেট্রাপোল। আগে প্রতিদিন ৩০০ এর বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসতো। এখন সেখানে ৫০ এ নেমে এসেছে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুদিন বন্দরের কাজকর্ম বন্ধ ছিল। শনিবার ভারত থেকে ১৫০ ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে এসেছে। আর রপ্তানি পণ্য নিয়ে ২১৩ ট্রাক গেছে ভারতে। রোববার এসেছে ৩৪ ট্রাক পণ্য, আর ভারত গেছে ১১১ ট্রাক পণ্য। সোমবার (৫ মে) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৪০ ট্রাক পণ্য এসেছে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে সাড়ে ৩০০-৫০০ পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর রপ্তানি পণ্য নিয়ে প্রতিদিন ২০০-২৫০ ট্রাক পণ্য যায় ভারতে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, অনলাইন সিস্টেমে বন্দর ও কাস্টমসের সব কাজকর্ম পরিচালিত হয়। এক সপ্তাহ ধরে ওপারের লিংক সিস্টেমটি অকার্যকর। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। অতি জরুরি ও পচনশীল পণ্য চালান কেবলমাত্র বিশেষ ব্যবস্থায় চালু রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ওপারের বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে কবে বা কখন থেকে পুরোপুরিভাবে চালু হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৪:৩১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
১১

বেনাপোল স্থলবন্দর : আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত, হাজারো ট্রাক দাঁড়িয়ে ওপারে

আপডেট: ০৪:৩১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে লিংক সার্ভিস (অনলাইন সিস্টেম) কাজ না করায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত হচ্ছে। যার ফলে হাজারো ট্রাক দাঁড়িয়ে ভারতের পেট্রাপোলে।

সবশেষ মঙ্গলবার (৬ মে) ওপারের বন্দরে দীর্ঘ হয়েছে ট্রাকের সারি। ফলে বাংলাদেশের অনেক শিল্পকারখানায় কাঁচামালের সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া রপ্তানি পণ্যও যথাসময়ে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। মূলত ২৮ এপ্রিল থেকে চলছে এই পরিস্থিতি। এতে পেট্রাপোল বন্দরে পণ্যজট দেখা দিয়েছে।

ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় দেড় হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে পেট্রাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে।

তিনি বলেন, পেট্রাপোল বন্দরের কাস্টমস ও বন্দরের অনলাইন সিস্টেমের লিংক সার্ভিস দিয়ে থাকে টাটা কোম্পানি। ২৮ এপ্রিল দুপুরে ঝড়ের পর লিংক সমস্যা দেখা দিয়েছে। টাটার কলকাতা অফিস সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। এখন দিল্লির ডিজি সিস্টেম মনিটর করছে। কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ অনলাইন সিস্টেমের বিকল্প হিসেবে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কিছু পণ্য ছাড় করছে।

বেনাপোল চেকপোস্টের কার্গো সূত্রে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৯৯০ ট্রাক পণ্য। আর রপ্তানি হয়েছে ১৬১২ ট্রাক পণ্য। ৯ দিনে গড়ে ৩৩০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল বন্দরে এসেছে।

এরপর লিঙ্ক সমস্যায় ২৯ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত চারদিনে (মাঝে দুদিন ছুটি) মাত্র ২৩২ ট্রাক পণ্য এসেছে। আর রপ্তানি হয়েছে ৭৫১ ট্রাক পণ্য। আমদানি হয়েছে গড়ে ৫৮ ট্রাক পণ্য।

বেনাপোল কাস্টমসের কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, পেট্রাপোল বন্দরে ইন্টারনেট লিংক না থাকায় তারা অনলাইন সিস্টেমে কাজ করতে পারছে না। অনলাইনের বিকল্প হিসেবে ট্যাবে ওয়াইফাই দিয়ে নামমাত্র কার্যক্রম চালু রেখেছে পেট্রাপোল। আগে প্রতিদিন ৩০০ এর বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসতো। এখন সেখানে ৫০ এ নেমে এসেছে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুদিন বন্দরের কাজকর্ম বন্ধ ছিল। শনিবার ভারত থেকে ১৫০ ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে এসেছে। আর রপ্তানি পণ্য নিয়ে ২১৩ ট্রাক গেছে ভারতে। রোববার এসেছে ৩৪ ট্রাক পণ্য, আর ভারত গেছে ১১১ ট্রাক পণ্য। সোমবার (৫ মে) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৪০ ট্রাক পণ্য এসেছে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে সাড়ে ৩০০-৫০০ পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর রপ্তানি পণ্য নিয়ে প্রতিদিন ২০০-২৫০ ট্রাক পণ্য যায় ভারতে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, অনলাইন সিস্টেমে বন্দর ও কাস্টমসের সব কাজকর্ম পরিচালিত হয়। এক সপ্তাহ ধরে ওপারের লিংক সিস্টেমটি অকার্যকর। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। অতি জরুরি ও পচনশীল পণ্য চালান কেবলমাত্র বিশেষ ব্যবস্থায় চালু রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ওপারের বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে কবে বা কখন থেকে পুরোপুরিভাবে চালু হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি তারা।