লাইফস্টাইল ডেস্ক : পুষ্টিগুণে দেখতে গেলে বাদামের কোনো বিকল্প নেই। এতে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং প্রোটিন উপস্থিত। যা স্বাস্থ্য এবং ত্বকের জন্য খুবই উপকারি।

গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কেউ যদি এক বাটি করে বাদাম খাওয়া শুরু করেন, তাহলে শরীরে এমন কিছু উপাদানের প্রবেশ ঘটে, যা এই যুদ্ধ শরীরকে চাঙ্গা তো রাখেই, সেই সঙ্গে একাধিক রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

বাদাম খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা নিয়মিত বাদাম খেলে কীকীউপকার হয়। জানি না বলেই অনেকে আছেন যারা বাদাম খেতে পছন্দ করেন না। তারা মনে করেন বাদামে প্রচুর ফ্যাট রয়েছে, যা ক্ষতিকর! কিন্তু এ তথ্য ভুল। শরীরের জন্যে দারুণ উপকারী বাদামের ফ্যাট। শুধু তা-ই নয়, বাদামে রয়েছে প্রচুর উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার এবং এন্টি-অক্সিডেন্টের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্য-উপাদান।

প্রতিদিন তিনবার ভারী খাবারের মাঝেও টুকটাক মুখ চালানোর জন্য বাদাম খুব ভালো বিকল্প একটি খাবার। বাদাম কাঁচা হোক বা শুকনো, খোলাই ভাজা বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট হার্টের জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু বাদাম খাওয়া ভালো বলে যে আমরা ইচ্ছেমতো তা যখন তখন খাব বিষয়টা এরকম না। প্রতিদিন বাদাম খাওয়ার নির্দিষ্ট একটা পরিমাণ আছে। কোন বাদামে ফ্যাটের পরিমাণ কতটুকু এবং সারা দিনে খাবারের তালিকায় কি পরিমান ফ্যাট থাকে তা বুঝেশুনেই বাদাম খাওয়া উচিত।

নিয়মিত বাদাম খাওয়ার সাথে সুস্থ ও দীর্ঘজীবনের একটি যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর কারণ হিসেবে তারা ধারণা করছেন, নিয়ম করে প্রতিদিন বাদাম খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে যাদের, ফাস্টফুড ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঘাতী খাবারের প্রতি তারা তুলনামূলক কম আগ্রহী এবং তাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসও অপেক্ষাকৃত স্বাস্থ্যকর।

কাঠবাদাম

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে প্রতিদিন যে পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন হয়, শুধুমাত্র কাঠবাদাম খেলেই তা পূরণ হয়ে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার জন্য প্রতিদিন ১৪ টা পর্যন্ত কাঠ বাদাম খাওয়া যেতে পারে।

কাজুবাদাম

কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যানাকারডিক এসিড যা মানসিক চাপ কমাতে অনেকাংশে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও দাঁতের মাড়ি এবং দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে কাজুবাদাম। তবে সারা দিনে ১১ টার বেশি এই বাদাম খাওয়া উচিত নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়ে থাকেন। এছাড়া ভিটামিন ই এবং ওমেগা ৩-এ ভরপুর কাজুবাদাম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে।

পেস্তা বাদাম

ওষুধের বিকল্প হিসেবে একমাত্র পেস্তা বাদামই হৃদযন্ত্রের ধমনী বা রক্তবাহিকার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি৬ এবং থায়ামিনের মত বহু গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে ভরপুর পেস্তা বাদাম। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলছেন, সারাদিনে পেস্তা বাদাম বিশটার মত খাওয়া যেতে পারে।

হেজেলনাট

বিভিন্ন ধরনের চকলেট, কেক, কফিতে ব্যবহার করা হয় এই হেজেলনাটের। ভিটামিন ই এবং ওমেগা৩-এ ভরপুর এই বাদাম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে দারুণভাবে সাহায্য করে থাকে। রক্তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলকেও কাবু করতে পারে হেজেলনাট। কিন্তু তাই বলে সারাদিনে দশটার বেশি খাওয়া উচিত নয় এই বাদাম।

আখরোট

আখরোটে রয়েছে ফ্যাটের পরিমাণ ৬৫ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ প্রোটিনের পরিমাণ। বিভিন্ন রকম ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর আখরোট হার্টের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া আখরোট খেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়। তবে এটি দিনে চারটার বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

তবে যে-কোনো একপ্রকারের বাদাম খাবেন, সবগুলো একসাথে নয়।