গতকাল এক চিঠিতে বিদ্যুৎ এর দাম বাড়াতে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিপুল পরিমাণ ভুর্তুকি কমাতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুৎ এর দাম বাড়ছে এটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল। এদিকে বিপিডিবি বর্তমান দর ইউনিট প্রতি ৫.১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৫৮ টাকা করার প্রস্তাব করেছে।

ভুর্তুকির টাকার উৎস কিন্তু জনগণ। এটা নিয়ে আর একদিন লিখবো। আজ বিদ্যুৎ এর বিষয় নিয়ে দুটো কথা লিখবো।
দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ এর উৎপাদন ক্ষমতা ২১৭১২ মেগাওয়াট। দেশে বিদ্যুৎ এর চাহিদা এত নয়। জ্বালানির দাম বাড়ায় বেশকিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এখন দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ১২ হাজার মেগাওয়াট এর মত। এই যে বাকি ৯/১০ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো অলস বসে রয়েছে এর জন্য সরকারকে প্রতিমাসে ক্যাপাসিটি চার্জ এবং ভাড়া বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থ বছরে শুধু ভাড়া বাবদ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলোকে দেওয়া হয়েছিল প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা। ২১-২২ অর্থ বছরের মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ ৯ মাসে এই বাবদ দিয়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৩ মাসের জন্য আরও প্রায় ৫/৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া লাগবে।
যেসকল বিদ্যুৎ কেন্দ্র টোটালি উৎপাদনে নেই তাদেরকেও বসিয়ে বসিয়ে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। এই বিপুল পরিমাণ টাকা যদি বন্ধ করা যেতো তাহলে ভর্তুকির পরিমাণ কত কমে যেত সেটা সহজেই অনুমেয়। আর এই ভুর্তুকি কমে গেলে বিদ্যুৎ এর মুল্যও বাড়ানোর প্রয়োজন হতোনা।
এমনিতেই জিনিসপত্রের মুল্য বৃদ্ধির ফলে গরীব, নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস চলছে। এরপরে যদি আবার বিদ্যুৎ এর দাম বাড়ে তবে আর এক দফা সব জিনিসের দাম বাড়বে। দাম বাড়ানোর পূর্বে বিষয়টি সরকারকে আরেকবার ভেবে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।

লেখক : আশরাফুজ্জামান বাবু
সহকারী শিক্ষক
ঝিকরগাছা দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা