আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে চীনে ইরানের অপরিশোধিত তেল রফতানি ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। ফলে ৪০ মিলিয়ন ব্যারেল ইরানী তেল এশিয়ার সমুদ্রে ট্যাঙ্কারে ভাসমান অবস্থায় ক্রেতা খুঁজছে। বিপরীতে বিশেষ মূল্য ছাড়ে রুশ তেল সংগ্রহ করছে বেইজিং।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ক্রেতার সন্ধানে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের বন্দরে নোঙর করে আছে ২০টি ইরানী তেলবাহী ট্যাঙ্কার। সিঙ্গাপুরের কাছে ভাসমান সঞ্চয়স্থানে ইরানের তেলের পরিমাণ এপ্রিলের শুরুতে ২২ মিলিয়ন ব্যারেল থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ৩৭ মিলিয়ন ব্যারেলে পৌঁছেছে।

ইরানের অপরিশোধিত তেলের এমন ক্রেতাহীনতার পেছনে রুশ তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় বিশেষ মূল্য ছাড়ে রুশ তেল সংগ্রহ করছে বেইজিং।

তথ্য ও পরামর্শক সংস্থাগুলোর হিসাব অনুযায়ী, মার্চ মাসে চীনে দৈনিক ৭ থেকে ৯ লাখ ব্যারেল তেল রফতানি করে ইরান। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বেইজিং রুশ তেল সংগ্রহ শুরু করলে যা এপ্রিলে দুই থেকে আড়াই লাখ ব্যারেলে নেমে আসে।

তেহরানে ইরানের তেল, গ্যাস ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য রফতানিকারক ইউনিয়নের বোর্ড সদস্য হামিদ হোসেইনি বলেন, ‘‘রাশিয়া তার প্রায় অর্ধেক রফতানি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষ করে চীনে পরিবর্তন করতে পারে… এবং এটি ইরানের অপরিশোধিত রফতানির জন্য একটি বড় সম্ভাব্য হুমকি।’’

বিশেষ মূল্যছাড়ে রুশ তেল সংগ্রহের বিষয়ে একজন চীনা পরিশোধিত তেল ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘কেউ আর ইরানের অপরিশোধিত তেলের দিকে তাকাচ্ছে না কারণ রাশিয়ান গ্রেড অনেক ভালো মানের এবং কম দামে। ইরানের তেল বিক্রেতারা প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে।’’

ওই চীনা ব্যবসায়ী আরও জানান, প্রতি ব্যারেল ৯ ডলার ছাড়ে ইউরাল (রাশিয়ান) কার্গো থেকে তেল সংগ্রহ করছে বেইজিং। রুশ তেলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বজায় রাখতে ইরানি ক্রুডকে ১২ থেকে ১৫ ডলার পর্যন্ত ছাড়ের প্রস্তাব দিতে হয়েছিল।

রুশ তেলের সরবরাহ বেড়েছে মধ্যপ্রাচ্যেও। চলতি বছরের মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরাহের স্টোরেজ হাবে প্রবেশ করেছে ২.৫ মিলিয়ন ব্যারেল রাশিয়ান জ্বালানী তেল। যা এপ্রিল মাসের চেয়েও ১২৫ শতাংশ বেশি।