সানজিদা আক্তার সান্তনা : পরীক্ষামূলক ট্রেন প্রায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে ভাঙ্গা থেকে যশোরের রুপদিয়া রেলস্টেশন পর্যন্ত ছুটে আসলো। একটি ব্লাস্ট ট্রেন শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ট্রায়াল হিসেবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসে। ট্রেনটি সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে যশোরের রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনটি প্রায় ১০ মিনিট স্টেশনে অবস্থান করার পর ফের ভাঙ্গার দিকে রওনা হয়।

রেল কতৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই ট্রেনের ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। এ পথে বাণিজ্যিক ট্রেন আগামী জুন মাস নাগাদ চলাচল শুরু হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

এ রেলপথ নির্মাণ করার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনা । ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ব্রডগেজ ওই রেলপথে ভাঙ্গা, কাশিয়ানী এবং যশোরের পদ্মবিলা ও সিঙ্গিয়াতে রেলওয়ে জংশন থাকছে। এছাড়া নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নড়াইল এবং যশোরের জামদিয়া ও রূপদিয়ায় রেলস্টেশন হয়েছে। কাজের অংশ হিসেবে শনিবার ও রোববার দু’দিন ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত বিভিন্ন গতিতে ট্রেন চালিয়ে নির্মাণ অবস্থা পরীক্ষা করা হবে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

ট্রায়ালের অংশ নেওয়া রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশের ৮৭ দশমিক ৩২ কিলোমিটার পথ ৮৪ কিলোমিটার বেগে পাড়ি দিয়েছেন তারা। পথে কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। এ রুটে আগামী জুনের মধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

রেলওয়ের সূত্রটি আরো জানান, এ প্রকল্প শেষের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত। মাঠপর্যায়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। ২০১৬ সালের ৩ মে একনেকে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প’ নামে এটির অনুমোদন হয়। এ প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা।

পরীক্ষামূলক ট্রেনের চালক আব্দুল মান্নান বলেন, সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে আমরা ভাঙ্গা স্টেশন থেকে ছেড়ে আসি। সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে যশোরের রূপদিয়া স্টেশনে পৌঁছাই। পথে কোন সমস্যা হয়নি।

ট্রেনের সহকারী লোকোমাস্টার হাসান মতিউর রহমান বলেন, ৬০ তেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ট্রেনটি ভাঙ্গা থেকে যশোরে এসেছে। এতে সময় লেগেছে এক ঘন্টা ৪০ মিনিট। ফিরে যাওয়ার সময় আরও ২০ কিলোমিটার বেশি গতিতে যাবে। এরপর যাত্রী নিয়ে যে ট্রায়াল ট্রেন ১২০ কিলোমিটার বেগে আসবে বলে তিনি জানান।

যশোর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান বলেন, এই ট্রেন যশোরবাসীর জন্যে প্রধানমন্ত্রীর ঈদের উপহার। ট্রেনটি ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে যশোরে আসে। যাওয়ার সময় আরও বেশি বেগে যাবে। আগামী জুন মাস নাগাদ এ রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।