সনতচক্রবর্ত্তী:আজ ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাই ফোঁটা উৎসব। ভাই এবং বোনের অটুট সম্পর্ক একটি উত্‍সব হিসাবে পালিত হয় এ দিনটি। দীপাবলির দ্বিতীয় দিনে ভাইফোঁটা পালিত হয়।

বোনেরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ভাই ফোটার জন্য। এই দিনে বোনেরা তাদের ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে পূজা করে, তার মঙ্গল কামনা করে এবং তিলক করা হয়।

এই উৎসবের আরও একটি নাম হল যমদ্বিতীয়া। কথিত আছে, এই দিন মৃত্যুর দেবতা যম তার বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তার বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। অনেক সময় এই ছড়াটি বিভিন্ন পরিবারের রীতিনীতিভেদে পরিবর্তিত হয়ে থাকে।

কথিত আছে, ভাই ফোটার দিন তিলক লাগালে ভাই দীর্ঘায়ুর পাশাপাশি সুখ-সমৃদ্ধির আশীর্বাদও পায়।

ভাইফোঁটা উপলক্ষে সব বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে এবং কপালে তিলক লাগিয়ে তার মুখ মিষ্টি করে। ভাইরা বোনদের উপহার দেয় এবং তাদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেয়।

পুরাণে উল্লেখ আছে- কার্তিকেয় শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমুনাদেবী তাঁর ভাই যমের মঙ্গল কামনায় গভীর ধ্যানমগ্ন হয়ে পুজা করেন। তাঁরই পুণ্যপ্রভাবে যমদেব অমরত্ব লাভ করেন। বোন যমুনা দেবীর পুজার ফলে ভাই… যমের এই অমরত্ব লাভের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে বর্তমান কালের বোনেরাও এই সংস্কার বা ধর্মাচার পালন করে আসছে।

এই দিন আমাদের বোনেরা উপবাস রেখে ভাইয়ের কপালে বাঁ হাতের অনামিকা আঙ্গুল দিয়ে চন্দন, ঘি, কাজল, মধু , শিশির,দিয়ে ফোঁটা দিয়ে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে থাকে।

অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দিয়ে ছড়া কেটে বলে-

“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা,

যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।

যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা,

আমি দেই আমার ভাইকে ফোঁটা।

যম যেমন হন চিরজীবী

আমার ভাই যেন হয় তেমন চিরজীবী।”

এইভাবে বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করে। তারপর ভাইকে মিষ্টি খাওয়ায়। ভাইও বোনকে কিছু উপহার বা টাকা দেয়।

ফোঁটা দেওয়ার শুভক্ষণ

১৪ নভেম্বর ভাই ফোঁটা পালন করলে দুপুর ২টো ৩৬ মিনিট থেকে ৩টে ১৯ মিনিটের মধ্যে ভাইকে তিলক লাগাতে পারেন। আবার যাঁরা উদয়া তিথি মেনে ১৫ নভেম্বর ভাই ফোঁটা পালন করবেন, তাঁরা সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে ভাই ফোঁটা সম্পন্ন করতে পারেন।