নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার পতনে আর কয়েকটা দিন আছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুকে সাহস নিয়ে রাজপথে থাকতে নেতার্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এই সরকারকে সরাতে হবে দেশ ও মানুষকে বাঁচানোর জন্য। কয়েকটা দিন আছে, মাসও নেই। আসুন আমরা বুকে সাহস নিয়ে রাজপথে নামি। মারবেতো মারবেই, ১৫ বছরে আমাদের হাজার লোককে মেরে ফেলেছে। গুম, মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে রাজপথে নেমে আসতে হবে। আন্দোলন করতে হবে।

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

“কৃষি উপকরণ খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি: সরকারের অব্যবস্থাপনা-কৃষক এবং জনগণের নাভিশ্বাস” শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে সোনালী দল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহ।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে খাদ্যদ্রব্য মূল্যবৃদ্ধি একটি নজিরবিহীন, বিশ্বের সব দেশেই দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে। তবে এ দেশে বেড়েছে অবিশ্বাস্য নজিরবিহীনভাবে। এর সব চেয়ে বড় মূল কারণ একটি জবাবদিহিহীন সরকার। যাকে কোথাও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। ইচ্ছে মতো যা ইচ্ছে তাই করছে। তাদের ব্যর্থ পরিচালনা, দুর্নীতি, দুঃশাসন আজ এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে, মানুষের নাভিশ্বাসও নেই এখন আর। এখন মৃত্যুবরণ করার মতো একটা অবস্থায় গেছে।

তিনি বলেন, দেশেতো প্রজেক্ট অনেক করা হয়। কিন্তু সেই প্রজেক্টের মূল লক্ষ্য হলো চুরি করা। এমন চুরি যেটা ১ লাখ টাকায় হবে সেটা তিন লাখ টাকা, যেটা ১০ কোটি টাকায় হবে সেটা ত্রিশ কোটি টাকা, ওই প্রজেক্টে যারা জড়িত থাকেন তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, এটাই বাস্তব কথা।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন কোনো সরকারি কর্মকর্তা কিন্তু অসুখী নয়। কারণ কেউ কোনো না কোনো প্রজেক্টে জড়িত আছেন। জড়িতদের প্রচুর পয়সা আছে। দেশের মানুষ ডিম কিনতে পারছে না। কিন্তু ইলেকশনে ঘুষ দেয়ার জন্যে ডিসি, ইউএনওদেরকে গাড়ি কিনে দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে শোনা যাচ্ছে, যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন ডিসি, এসপিদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা পৌঁছে গেছে।

তিনি বলেন, এ সরকার অনির্বাচিত সরকার। তারা ১৫ বছর দেশটাকে একটা লুটের রাজত্ব করেছে। কী পরিমাণ লুট করেছে তা বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না। এর পরিণাম আজ বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হচ্ছে।

‘বিকল্প কিছুই নেই, একটাই মাত্র কাজ এই সরকারকে সরাতে হবে এ দেশ ও মানুষকে বাঁচানোর জন্য। আমার খাওয়ারতো অধিকার আছে, বেঁচে থাকারতো অধিকার আছে, এখন দেখি বিচার পাওয়ার অধিকারও আমার নাই। দুর্নীতি, লুটপাট করে এরা একটা মগের মুল্লুক তৈরি করেছে, সেখান থেকে এরা আর বের হতে চায় না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন আওয়ামী লীগ একটা নতুন সুর তুলেছে, বিএনপি সন্ত্রাসী দল, বিএনপি সন্ত্রাসী দল হলে আওয়ামী লীগ কি? আপনারা সন্ত্রাসের বাবা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই রাষ্ট্রকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে করে মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকটা দিন আছে। মাসও নেই, আসুন আমরা বুকে সাহস নিয়ে রাজপথে নামি। আরে মারবেতো মারবেই, ১৫ বছরে আমাদের হাজার লোককে মেরে ফেলেছে। গুম, মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে রাজপথে নেমে আসতে হবে। আন্দোলন করতে হবে।

সরকারের প্রতি শেষ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মানে মানে ক্ষমতা ছাড়ুন, দেশের মানুষকে বাঁচতে দেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে কেটে পড়ুন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড আজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, আব্দুস সালাম, কৃষকদলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, ড আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।