রাজগঞ্জ অঞ্চলে স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চলছে রমরমা সুদের ব্যবসা
উত্তম চক্রবর্তী, মণিরামপুর(যশোর)।। কোন ধরনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারসহ প্রতিটি গ্রামের মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠা স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চলছে রমরমা সুদের ব্যবসা। সুদের ব্যবসা করে অনেকেই রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে।
জানাগেছে, অনেক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর অলংকার তৈরীর নিজস্ব কোন সরঞ্জাদি ও কারিগর নেই। অলংকার তৈরির সাইন বোর্ড সাটিয়ে স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছেন রমরমা সুদের ব্যবসা। শুধু তাই নয়, কিছু অসাধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গ্রাহকদের সাথে বিভিন্ন কৌশলে প্রতারনা করছেন। অনেক ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে বিভিন্ন ক্যারেট স্বর্ণ আমদানির নাম করে গ্রাহকদের কাছে ভেজাল স্বর্ণ বিক্রি করছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে ব্যবসায়ীদের সাথে গ্রাহকদের হরহামেসা দেন দরবার দেখা যায়।
এছাড়া স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে সুদের ব্যবসা করে অনেকে রাতা-রাতি কোটিপতি হওয়ার আসায় মাত্র দুই-তিন বছরে অলংকার তৈরির কারিগর থেকে নিজেই স্বর্ণ ব্যবসায়ী বনে যায়। অনেক অসহায় মানুষ টাকার প্রয়োজনে স্বর্ণ বন্ধক রেখে টাকা নেন। টাকা নেওয়ার সময় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা গ্রাহককে নির্দিষ্ট সময় সীমা বেধে দেন। আর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গ্রাহক সুদ-আসলসহ টাকা দিয়ে বন্ধুকী স্বর্ণ ছাড়াতে না পারলে ব্যবসায়ীরা গ্রাহককে আর বন্ধুকী স্বর্ণ ফেরৎ দিচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কিছু ব্যবসায়ী গ্রাহকের এ বন্ধুকি স্বর্ণ অন্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী (মহাজন) কাছে দিগুন টাকায় গ্রাহকের স্বর্ণ বন্ধক রেখে জমজমাট সুদের ব্যবসা করছে। গ্রাহক বন্ধুকী স্বর্ণ ছাড়িয়ে নিতে এলে অসাধু ব্যবসায়িরা গ্রাহককে ভেজাল স্বর্ণ দেয়।
এ ছাড়া এমনও ঘটনা রয়েছে যে, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গ্রাম-গঞ্জের অসহায় মানুষের বন্ধুকী স্বর্ণ হাতিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে গেছে। রাজস্ব বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী স্বর্ণ বিক্রির সময় প্রতিটি স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মূল্য সংযোজন কর চালান বই থাকা বাধ্যতামুলক। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যে পরিমান টাকার স্বর্ণ বিক্রি করেন, সেই পরিমান টাকার উপর ক্রেতারা মূল্য সংযোজন কর প্রদান করলেও অসাধু স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা সরকারের এ টাকা আত্মসাৎ করেন।
মূল্য সংযোজন চালান বই-১১ অনুযায়ি, ব্যবসায়িরা সঠিক সময়ে সরকারকে কর পরিশোধ করল কিনা তা দেখভালের জন্য কর বিভাগের লোক থাকলেও কিছু অসৎ কর্মকর্তা ব্যবসায়িদের কাছ থেকে মাসহারা নিয়ে নিজের আখের গোছাচ্ছেন। ফলে সঠিক নজরদারীর অভাবে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে।