খোসাসহ আলুর খাওয়ার উপকারিতা
সানজিদা আক্তার সান্তনা : স্বাদে অনন্য আলু একটি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। প্রায় প্রতিদিনই পাতে আলু রাখেন কমবেশি সবাই। আলু ভর্তা, ভাজি কিংবা আলুর ঝোল খাওয়ার মজাই আলাদা। তবে অনেকেই আলু রান্নার সময় খোসা ফেলে দেন। জানলে অবাক হবেন, আলুর খোসায় আছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
আলুর খোসা না ছাড়িয়ে যদি রান্না করেন, সেক্ষেত্রে ভালোভাবে আলু পরিষ্কার করে নিতে হবে। যেহেতু আলুর গায়ে প্রচুর ময়লা থাকে, তাই ভালো করে পানি দিয়ে কয়েকবার করে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
চলুন জেনে নেই আলুর খোসার উপকারিতা: আলুর খোসায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম, যা পেশীর যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে। আলুর খোসায় থাকা পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে। পটাশিয়ামের ভালো একটি উৎস হলো আলুর খোসা। এতে আছে পর্যাপ্ত আয়রন যা লোহিত রক্তকণিকার কার্যকারিতা বাড়ায়। আলুর খোসায় আরও আছে ভিটামিন বি ৩, যা খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণে শরীরকে সাহায্য করে।
আলুর খোসায় ফাইবার থাকে, নিয়মিত আলুর খোসা খেলে খেলে তা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। যা হজমশক্তি ভালো রাখে।
আলুর খোসা হৃদযন্ত্রের কাজে সাহায্য করে। নিয়মিত আলুর খোসা খেলে তা পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের মাধ্যমে রক্তচাপ সঠিক রাখার কাজ করে। ফলে দূরে থাকা যায় আরও অনেক অসুখ থেকে। সুস্থতার জন্য তাই খোসা না ফেলেই আলু রান্না করুন।
হাড়ের নানা সমস্যায় ভোগেন অনেকে। আলু যদি খোসাসহ খান তবে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে। আলুর খোসায় আছে খনিজ যা হাড় শক্ত ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম যা হাড় সুস্থ রাখে। আলুর খোসা হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখে এবং মেনোপজের পরে নারীর অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
বর্তমানে ডায়াবেটিস এক নীরব ঘাতকের নাম। এই ঘাতক থেকে দূরে থাকতে খেতে পারেন খোসাসহ আলু। খোসাসহ আলু খেলে তা দীর্ঘ সময় আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে। আলুর খোসায় ফাইবার ছাড়াও আছে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে দূরে থাকে ডায়াবেটিস।
হাই কোলেস্টেরলে ভুক্তভোগীরা নিয়মিত খোসাসহ আলু খেতে পারেন। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনলের ভাণ্ডার যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এতে থাকা ফাইবার খাবারে উপস্থিত কোলেস্টেরলকে অন্ত্রে বেঁধে ফেলে। তার পর মলের মাধ্যমে বের করে দেয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে গেলে মানুষ অল্পতেই অসুস্থ হয়ে যায়। জ্বর, সর্দি, কাশিতেও ভুগতে থাকে। তাই ইমিউনিটি বাড়ানো উচিত। আর ইমিউনিটি বাড়া আলুর খোসার সাহায্য নিতে পারেন। কারণ, এতে রয়েছে ভরপুর ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। আর এসব উপাদান ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সহজে কাবু করতে পারে না।
যদি নিয়মিত খোসা সমেত আলু খান, তাহলে ক্যানসার কাছে ঘেষতে পারবে না। কারণ, এতে রয়েছে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড। আর এই অ্যাসিড ক্যানসারের থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে। তাই আজ থেকেই খোসাসহ আলু খাওয়া শুরু করুন।
আলুর খোসায় রয়েছে আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, জিঙ্কের মতো খনিজ। আর এই সমস্ত খনিজ হাড়ের জোর বাড়ায়। অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে।