টপ নিউজ | তারিখঃ আগস্ট ২৩, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2178 বার
ডেস্ক রিপোর্ট : টিসিবি’র খাদ্রদ্রব্য কেলেঙ্কারি অভিযোগে জনরোষানলে পড়ে দিনভর ইউনিয়ন পরিষদে অবরুদ্ধ ছিলেন বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক। মঙ্গলবার সকালে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তার নিজস্ব দলবল কর্তৃক টিসিবি’র খাদ্যদ্রব্য বিতরণকালে এলাকার মানুষের মুখ চিনে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ এবং এমপি পন্থী মেম্বরদের ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশে বাধা প্রদাণসহ স্থানীয়দের টিসিবি’র কার্ড রেখে খাদ্যদ্রব্য না দেওয়ায় জনরোষানলে পড়েন তিনি। পরে শার্শা থানার অর্ন্তগত বাগআঁচড়া আইসি পুলিশ এসে স্থানীয়দের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে মুক্ত হয় খালেক চেয়ারম্যান।
বিষয়টি অবগত করেছেন শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর আবু তালেব, শামীম কবির, আব্দুল মালেক, কামরুল ইসলাম, মোজাম গাজী, সালিমা বেগমসহ স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ইয়ার আলী প্রমুখ।
এ খাদ্যদ্রব্য কেলেঙ্কারির ঘটনায় বাগআঁচড়া বাজারে চেয়ারম্যান আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর ও জনতা।
কথা হয় বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর আবু তালেবের সাথে। তিনি বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের নৌকা প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনে বিভিন্ন কুট ও অপকৌশল অবলম্বন করে জয়লাভ করার পর থেকে তিনি বাগআঁচড়া ইউনিয়নে একক ক্ষমতা জাহির ও আওয়ামীলীগের এমপি পন্থী ইউপি মেম্বর জনগণকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যসহ সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত করে চলেছেন। বরাবরের ন্যায় মঙ্গলবারও তিনি তার ভোটার দেখে টিসিবি’র খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং এমপি পন্থীদের কার্ড রেখে দিয়ে খাদ্যদ্রব্য বাদে ফিরিয়ে দেওয়া এবং তার অপরাধ জগতের পেটোয়া বাহিনীর নেতা শফিক ধাবক কর্তৃক মন্টু মেম্বরকে ইউনিয়ন পরিষদে বাধা প্রদাণ ও হেনস্থা করায় স্থানীয় জনতা তাদের ধৈর্যের বাধভাঙ্গে। বাজার ও ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বিক্ষোভ এবং সমাবেশ করে। তাতে জনরোষানলে পড়ে খালেক চেয়ারম্যানসহ তার দলবল পরিষদের মধ্যেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে, পুলিশ এসে স্থানীয়দের ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
কথা হয়, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ইয়ার আলীর সাথে। তিনি বলেন, সকালে টিসিবি’র খাদ্যসামগ্রী বিতরণকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছিলেন মন্টু মেম্বর। এসময় খালেক চেয়ারম্যানের সহচর শফিক ধাবক মেম্বরকে প্রবেশে বাধাদেয় এবং টেনে হিঁচড়ে হেনস্থা করে। এছাড়া মুখচিনে সেখানে টিসিবি’র খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এসাথে এমপি পন্থীদের টিসিবি’র কার্ড রেখে দিয়ে তাদেরকে বাড়ি চলে যেতে বলা হয়। যা খুবই অমানবিক বলে তিনি মনে করেন। বলেন, টিসিবি’র কার্ড সাধারণত গরীবদের জন্য। সাধারণ মানুষের একটু স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপনের জন্যইতো সরকার এই কার্ডের ব্যবস্থা করেছেন। সেখানে মানবিচার করা সমুচিত হয়নি।
কথা হয় মেম্বর মন্টুর সাথে। তিনি বলেন আমি একজন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর হয়ে যদি ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশ করতে না পারি, তাহলে জনগণ কিজন্য আমাকে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি বানিয়েছে? সেখানে চেয়ারম্যান আব্দুল খালেকের অপরাধ জগতের সহচর শফিক ধাবক আমাকে ঘাড় ধরে বের করে দিয়েছে যা আমি মেনে নিতে পারিনি।
কথা হয় একে একে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের আরো কয়েকজন মেম্বরের সাথে। তারা বলেন, কেবল টিসিবি’র কার্ড নয়, ভিজিএফ’র কার্ড নিয়েও জালিয়াতি করছেন খালেক চেয়ারম্যান। প্রত্যেক ওয়ার্ডের যেসকল জনগণ তাকে ভোট দিয়েছে বলে মনে করে, তাদেরকে কেবল ভিজিএফ’র চাল দেওয়া হয়, বাকিদের কার্ড নিজ জিম্মায় রেখে দিয়ে তাদেরকে চাল দেওয়া হয়না। এসকল বিষয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
কথা হয় বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেকের সাথে। তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, কথা গুলি সঠিক না। এছাড়া টিসিবি’র কার্ড নিয়ে কোন কেলেঙ্কারি হয়নি। শফিক ধাবক কর্তৃক ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বরের সাথে একটু ঝামেলা হয়েছে এবং পরে তা পুলিশের উপস্থিতিতে মিটেগেছে বলে দাবি করেন তিনি।
কথা হয় বাগআঁচড়া আইসি ক্যাম্পের টুআইসি সোহরাব হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, একটু ঝামেলা হয়েছিলো তা মিমাংশা হয়েগেছে।