গনমাধ্যম, জাতীয় সংবাদ | তারিখঃ আগস্ট ৭, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 6345 বার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহসহ সারা দেশে শিক্ষকতা পেশায় থেকে যারা সাংবাদিকতা করছেন তাদের তালিকা তৈরী হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি আদেশ প্রতিটি জেলায় জেলায় পৌছে গেছে।
জেলা প্রশাসকরা প্রতিটি উপজেলায় চিঠি পাঠিয়ে শিক্ষককাম সাংবাদিকদের তালিকা তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন। ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন এ বিষয়ে আমরা ঝিনাইদহের সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কাছে তালিকা চেয়েছি।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৪ মে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তহীক ডাকুয়া’ পত্রিকার সম্পাদক শামিম বিন সাত্তার শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠান। চিঠিতে উল্লেখ করা হয় বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ সালে প্রণীত ১১.১৭ অনুচ্ছেদে এমপিও ভুক্ত কোন শিক্ষক বা কর্মচারী একই সঙ্গে একাধিক লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে না। এটি তদন্তে প্রমানিত হলে সরকার তার এমপিও বাতিল করে বিধিমোতাবেক শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবে। চিঠিতে বলা হয় শিক্ষকরা সাংবাদিকতা করতে গিয়ে তাদের মুল পেশা শিক্ষকতায় সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। অনেক সময় তারা কলেজ বা স্কুল ফাঁকি দিয়ে জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় শহরের অফিস আদালতে কর্মকর্তাদের হুমকী ধমকি দিচ্ছেন। ফলে প্রশাসন ও প্রকৃত সাংবাদিকদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। সাংবাদিকদের ভাবমুর্তি রক্ষা করতে শিক্ষকতা পেশায় থেকে যারা সাংবাদিকতা করছেন তাদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানানো হয়।
এদিকে ‘সাপ্তহীক ডাকুয়া’ পত্রিকার সম্পাদক শামিম বিন সাত্তারের চিঠির আলোকে ২০২২ সালের ৫ জুন খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশক্রমে সহকারী বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ হোসেন ঝিনাইদহসহ দক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি দেন। চিঠিতে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক যারা একাধিক পেশায় নিয়োজিত আছেন দ্রæত তাদের তালিকা করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন দপ্তরের সহকারী কমিশনার (শিক্ষা) লায়লা ইয়াসমিন গত ৭ জুন ১৪৭(৬) স্মারকে ঝিনাইদহের ৬ উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের তালিকা তৈরী করে জেলা প্রশাসক দপ্তরে পাঠানোর নির্দেশনা জারি করেন। দুই মাস অতিবাহিত হলেও সাংবাদিক পেশায় থাকা শিক্ষকদের পুর্নাঙ্গ তালিকা তৈরী হয়নি বলে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকারী চাকরী বিধি মোতাবেক বেসরকারী স্কুল কলেজের শিক্ষকদের সাংবাদিকতা করার সুযোগ নেই। কারণ সরকার তাদের বেতনের শতভাগ প্রদান করছে। তাছাড়া সাংবাদিকতা এখন একটি লাভজনক পেশা। সরকারী দপ্তরের বিজ্ঞাপন থেকে তারা পার্সেন্টেজ পাচ্ছেন। ওই কর্মকতা জানান, শিক্ষিত যুবকের পাশাপাশি অনেক মেধাহীন ভবঘুরে যুবকরা এই পেশায় এসে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। সারাদেশের চিত্র খুবই নাজুক।
এ ব্যাপারে ‘সাপ্তহীক ডাকুয়া’ পত্রিকার সম্পাদক শামিম বিন সাত্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, দুই মাস অতিবাহিত হলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা এখনো তালিকা জমা দেয়নি। এটা দুঃখজনক। তিনি বলেন বিষয়টি তিনি মন্ত্রনালয় ও বিভাগীয় কমিশনারকে অভিহিত করবেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম জানান, আমরা এ ধরণের একটি চিঠি পেয়ে তালিকা তৈরীর করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের চিঠি দিয়েছি। এছাড়া ঝিনাইদহের সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তাদের কাছেও শিক্ষকতা পেশায় থেকে যারা সাংবাদিকতা করছেন তাদের তালিকা চাওয়া হয়েছে।