নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রবল গণ আন্দোলনের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের বিভিন্ন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছে পদত্যাগের হিড়িক, অনেকেই বরখাস্তও হচ্ছেন।

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনেও বিরাজ করছে এক ধরনের ভূতুড়ে পরিবেশ। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর প্রথম কার্যদিবসে গত ৬ আগস্ট অফিস করেননি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তবে পরের দিনও তিনি অফিস করেননি।

অন্য চার নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশিদা সুলতানা, আহসান হাবীব খান, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমানও ৬ আগস্ট অফিস করেননি। আর পরের দিন অর্থাৎ ৭ আগস্ট অফিস করেছিলেন দুই নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান ও মো. আলমগীর। এছাড়া প্রথম দুদিন ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অফিসে আসেননি।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ইসিতে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে কোন কর্মকর্তাকে কখন কোথায় বদলি করা হয় সেই আতঙ্কে ভুগছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের যাত্রা শুরু হয়। গত ৭ জানুয়ারি এই কমিশনের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো জয় পেয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।

কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন সরকার পতনের এক দফায় রূপ নিলে প্রবল গণ আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। নানা ঘটনা পরিক্রমার পর পরের দিন ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

এরপরই ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী বাংলাদেশি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে এই সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে আসেননি সিইসিসহ বাকি চার কমিশনার।

পরে জানা যায়, শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বঙ্গভবন থেকে নির্বাচন কমিশনকে দাওয়াত দেওয়া হলেও নিরাপত্তাব্যবস্থা না দেওয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।

এদিকে গত ৮ আগস্ট আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ছাত্র-জনতার ব্যানারে এক দল লোক কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে ব্যানার টানিয়ে গেছেন।

এমন প্রেক্ষাপটে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না সেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে চলছে বিস্তর কানাঘুষা। যদি তাই হয় ক্ষমতার পটপরিবর্তনের মধ্যে দেশের ১৩তম নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডেরও সমাপ্তি ঘটবে।