সারাবিশ্ব | তারিখঃ জুলাই ১৮, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 5857 বার
সারাবিশ্ব ডেস্ক : চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (১৭ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানান দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক তার প্রশ্নে বলেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে দমনাভিযান চলছে। এতে ক্ষমতাসীন দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন শিক্ষার্থী। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের প্রতি নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছে; বিশেষত ছাত্রী ও নারীদের প্রতি। দেড় দশক ধরেই তারা বারবার এমনটা করে আসছে। ছাত্রলীগকে কি আপনি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করবেন?’
যার জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, এই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কোনো কথা বলব না। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর যে সহিংসতা হচ্ছে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নজরে রাখছে। প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণভাবে করার বিষয়েও আমরা অব্যাহত আহ্বান জানিয়েছি। একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যেকোনো ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাই আমরা।
এরপর মার্কিন মুখপাত্রকে কোটা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বোরোবি) অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদের নিহতের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাকে প্রশ্ন করা হয়, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের তরুণ ছাত্র আবু সাঈদ তার সহপাঠীদের বাঁচাতে পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। কিন্তু শাসক বাহিনী তাকে গুলি করতে দ্বিধাবোধ করেননি। এমনকি সে বুঝতেও পারেনি যে, তাকে গুলি করা হয়েছে।
এভাবেই নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। সারা বিশ্ব বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে এবং এ জন্য মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু যখন জনগণের (ভোটের) অধিকার ছিনতাই করা হলো, তখনই হঠাৎ আপনারা নীরব হয়ে গেলেন। কেন এমন হলো?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, প্রথমত, এটা সঠিক নয়। আপনি আমাকে এই সপ্তাহজুড়ে বেশ কয়েকবার এ বিষয়ে কথা বলতে শুনেছেন – গত সোমবার বলেছি – আমার মনে হয় আমি মঙ্গলবার আবার বলেছি, আমি আজ আবারো বলছি – শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে যেকোনো সহিংসতার নিন্দা করি আমরা।
তিনি বলেন, আমরা এই বিষয়টি ঢাকায় আমাদের দূতাবাস খুব কাছ থেকে দেখছে এবং ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা বিক্ষোভের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন। বিক্ষোভে লোক মারা যাওয়ার, নিহত হওয়ার খবরও আমরা দেখেছি। আমরা আবারো, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার বিষয়ে মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
এর আগে সোমবার (১৫ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে কোটা আন্দোলনের প্রসঙ্গ উঠানো হয়। ওই দিন মিলার বলেন, ঢাকা ও আশপাশে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের বিষয়ে আমরা জেনেছি এবং পর্যবেক্ষণ করছি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ যে কোনো বিকাশমান গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত। আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর যে কোনো সহিংসতার নিন্দা করি। যারা এই সহিংসতার শিকার হয়েছেন তাদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।