স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের বকুলিয়া গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে ১ মাস যাবত অবাধে চলছে মাটিবাহী ট্রাক্টর, যার ফলে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসী।

গত একমাস যাবৎ দিনরাত নায়ড়া থেকে মাটিবাহী ট্রাক্টর বকুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে খুব দ্রুত গতিতে জামতলায় যাওয়া আসা করছে।
এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে বকুলিয়া, দেউলিয়া ও শংকরপুরের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অনেকে নাম না জানানোর শর্তে অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের চলাচলের রাস্তা দিয়ে ১ মাস যাবত মাটিবাহী ট্রাক চলার কারণে বাচ্চাদের নিয়ে খুব টেনশনে থাকি, প্রচন্ড ধুলা আর বিকট শব্দের কারণে আমাদের শিশুরা স্বাস্হ্য ঝুকিতে যেমন রয়েছে তেমনি দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। অনেকে তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন।

এদিকে গ্রামবাসীদের অভিযোগ চাষের জমির পাশদিয়ে গাড়ি চলাচল করায় ধুলায় তাদের ফসল নষ্ট হচ্ছে, নায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক এবং সার, কীটনাশকেও কাজ করছে না। তারা এই অবৈধ মাটির গাড়ি বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নায়ড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের মাছের ঘের থেকে সামটা গ্রামের সুমন ও পিপড়াগাছি গ্রামের লিটন ১০/১৫ টি ট্রাক্টর লাগিয়ে ১৫ দিন ধরে দিনরাত মাটি কাটাচ্ছে এবং সেই মাটি হাড়িখালির কুচেমোড়া গোল্ড ভাটায় দিচ্ছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মজিদ বলেন, আমার পুরনো মাছের ঘের সংস্কার করতে চাইলে সুমন এবং লিটন নিজেদের খরচে এই মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

সুমন বলেন, আমরা আমাদের খরচে মজিদের ঘের থেকে মাটি কেটে গোল্ড ভাটায় দিচ্ছি। মাটি কাটার জন্য প্রশাসনের অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান তাদের ঈদগাহে একগাড়ি ইট ও কয়েক গাড়ি মাটির বিনিময়ে মৌখিক ভাবে আমাদেরকে মাটি কাটতে অনুমতি দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মজিদের ঘের ছাড়াও পাশেই আরও দুটি স্পট থেকে নায়ড়ার কাজল এবং স্বপন মাটি কাটছে কিন্তু প্রশাসন তাদের কিছু না বলে শুধু আমাদের গাড়িগুলো আটকে রেখেছে। মাটি কাটা যদি বন্ধ করতে হয় তবে সবারটা বন্ধ করা হোক।

অন্যদিকে বিভিন্ন সময়ে মাটি কাটার গাড়িতে প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে অনেকে বলেন, আমরা প্রশাসনের নিকট বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ দিয়েছি পরে প্রশাসন এসে মাটিবাহী গাড়ী বন্ধ করে দেয়। পরের দিনই তারা আবার মাটি বহন করে যেটা খুবই রহস্যজনক।
তারা আরও বলেন মাটিখেকো এ সিন্ডিকেটটি খুবই শক্তিশালী যার কারনে আমাদের সাধারনের অভিযোগে প্রশাসন এলেও তাদেরকে ম্যানেজ করে আবার পরের দিনই মাটি বহন শুরু করে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, গ্রামবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে আজ কয়েকটি মাটির গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এভাবে কাউকে মাটি কেটে পরিবেশের ক্ষতি করতে দেওয়া হবেনা। এর সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।