০২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

নড়াইলে মুন্নি খানম হত্যা রহস্যের জট খুলল ১২ ঘণ্টায় : যশোর পিবিআইয়ের অভিযানে গ্রেফতার ঘাতক সোহেল

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৫:৪৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র ১২ ঘণ্টার টানটান গোয়েন্দা তৎপরতায় মুন্নি খানম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই যশোর।

রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা সোহেল সরদারকে (২০)। তার দেখানো মতে উদ্ধার হয়েছে নিহত মুন্নির গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন।

নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার দক্ষিণ নলামারা গ্রামের শিমুল মিনার মেয়ে মুন্নি খানম (২০)। প্রায় ১৪ মাস আগে খুলনার তেরখাদা উপজেলার হৃদয় ফকিরের সঙ্গে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।

গত ২৯ আগস্ট বিকাল ৪টায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন মুন্নি। রাত হতেই আর শ্বশুরবাড়িতে ফেরেননি তিনি। রাত ৯টার পর থেকে নিখোঁজ থাকায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাননি। পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তারা।

২ সেপ্টেম্বর সকালে দক্ষিণ নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে কচুরিপানার নিচে ভেসে ওঠে এক তরুণীর লাশ। খবর পেয়ে ছুটে যান মুন্নির পরিবার। নিশ্চিত হন—নিহত তরুণী আর কেউ নন, তাদের মেয়ে মুন্নি খানম।

পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে।

ঘটনার পরপরই ছায়া তদন্তে নামে পিবিআই, যশোর। তথ্য প্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বেরিয়ে আসে হত্যার নেপথ্য কাহিনী।

যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবার নেতৃত্বে অভিযান চালায় একাধিক দল। পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাইদুর রহমান পিপিএম-সেবা ও এসআই আলমগীরের নেতৃত্বে ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি মেস থেকে ঘাতক সোহেল সরদারকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল স্বীকার করে, মুন্নির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিবাহিত অবস্থায়ও তাদের যোগাযোগ চলছিল। ২৯ আগস্ট রাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে দেখা করতে গেলে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাগে-ক্ষোভে মুন্নিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের ডোবায় ফেলে দেয় সোহেল।

মুন্নির গলার স্বর্ণের চেইন লুট করে নিয়ে যায়, যা পরে ইমিটেশন ভেবে নিজ বাড়ির বাঁশবাগানে ফেলে দেয়। সেই চেইনটি উদ্ধার করেছে পিবিআই।

মুন্নির মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা (নং-০২, তারিখ ০৩/০৯/২০২৫, ধারা ৩০২/২০১/৩৪) দায়ের করেন। পিবিআই যশোর জেলা স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে। গ্রেফতারকৃত আসামি সোহেল সরদারকে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর-২০২৫) আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

নড়াইলে মুন্নি খানম হত্যা রহস্যের জট খুলল ১২ ঘণ্টায় : যশোর পিবিআইয়ের অভিযানে গ্রেফতার ঘাতক সোহেল

আপডেট: ০৫:৪৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র ১২ ঘণ্টার টানটান গোয়েন্দা তৎপরতায় মুন্নি খানম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই যশোর।

রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা সোহেল সরদারকে (২০)। তার দেখানো মতে উদ্ধার হয়েছে নিহত মুন্নির গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন।

নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার দক্ষিণ নলামারা গ্রামের শিমুল মিনার মেয়ে মুন্নি খানম (২০)। প্রায় ১৪ মাস আগে খুলনার তেরখাদা উপজেলার হৃদয় ফকিরের সঙ্গে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।

গত ২৯ আগস্ট বিকাল ৪টায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন মুন্নি। রাত হতেই আর শ্বশুরবাড়িতে ফেরেননি তিনি। রাত ৯টার পর থেকে নিখোঁজ থাকায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাননি। পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তারা।

২ সেপ্টেম্বর সকালে দক্ষিণ নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে কচুরিপানার নিচে ভেসে ওঠে এক তরুণীর লাশ। খবর পেয়ে ছুটে যান মুন্নির পরিবার। নিশ্চিত হন—নিহত তরুণী আর কেউ নন, তাদের মেয়ে মুন্নি খানম।

পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে।

ঘটনার পরপরই ছায়া তদন্তে নামে পিবিআই, যশোর। তথ্য প্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বেরিয়ে আসে হত্যার নেপথ্য কাহিনী।

যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবার নেতৃত্বে অভিযান চালায় একাধিক দল। পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাইদুর রহমান পিপিএম-সেবা ও এসআই আলমগীরের নেতৃত্বে ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি মেস থেকে ঘাতক সোহেল সরদারকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল স্বীকার করে, মুন্নির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিবাহিত অবস্থায়ও তাদের যোগাযোগ চলছিল। ২৯ আগস্ট রাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে দেখা করতে গেলে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাগে-ক্ষোভে মুন্নিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের ডোবায় ফেলে দেয় সোহেল।

মুন্নির গলার স্বর্ণের চেইন লুট করে নিয়ে যায়, যা পরে ইমিটেশন ভেবে নিজ বাড়ির বাঁশবাগানে ফেলে দেয়। সেই চেইনটি উদ্ধার করেছে পিবিআই।

মুন্নির মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা (নং-০২, তারিখ ০৩/০৯/২০২৫, ধারা ৩০২/২০১/৩৪) দায়ের করেন। পিবিআই যশোর জেলা স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে। গ্রেফতারকৃত আসামি সোহেল সরদারকে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর-২০২৫) আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।