জাতীয় সংবাদ | তারিখঃ মার্চ ১৪, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 5058 বার
নিজস্ব প্রতিবদেক : বাজার নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগে কঠোর হলে বাজার লাগামহীন হতো না বলে মন্তব্য এসেছে হাইকোর্টের। নিত্যপণ্যের বাজার জোটবদ্ধ ব্যক্তি-গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়াকে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখছে হাইকোর্ট।
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ ও নীতিমালা গঠন সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এই মন্তব্য আসে।
গত ৬ মার্চ রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবির, মনির হোসেন ও মোহাম্মদ উল্লাহ। সোমবার রিট আবেদনে আদালত কোনো আদেশ না দিলেও রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে আবেদনটি সংশোধন করে আনতে বলে মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রেখেছে।
আদালত বলেছেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আইন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত বিধি না করায় আইনের প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন সম্ভবপর হচ্ছে না। আর এর সুযোগ নিচ্ছে জোটবদ্ধ ব্যক্তি-গোষ্ঠী।
রিট আবেদনের বিরোধিতা করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা আদালতে বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। ইতোমধ্যে সয়াবিন তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সরকার বাজার তদারকিতে টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে এ রিটে রুল জারি করা ঠিক হবে না।’
তখন বেঞ্চের এক বিচারক বলেন, ‘প্রতিযোগিতাবিরোধী জোট কীভাবে নিরূপণ করছেন? ২০১২ সালে প্রতিযোগিতা আইন হয়েছে। এখন পর্যন্ত আইনটির বাস্তবায়ন নেই। প্রতিযোগিতাবিরোধী চুক্তি, কর্তৃত্ব বন্ধ করতে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’ বিচারক প্রতিযোগিতা আইনের তৃতীয় অধ্যায়ের ১৫ ধারা উল্লেখ করে বলেন, ‘এ আইনে মনোপলি (একচেটিয়া) ব্যবসা বন্ধের কথা বলা আছে। সরকার বিধি-নীতিমালা করছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ কারণে আইনের প্রয়োগ নাই। এরকমটা সব সময় হয়ে আসছে। আপনারা যদি কঠোর হতেন, তবে বাজার লাগাম ছাড়া হতো না। আগে থেকে সচেষ্ট থাকলে জনসাধারণের ভোগান্তি হত না।’
বিচারক বলেন, ‘একটা গ্রুপের কাছে একচেটিয়া ব্যবসা চলে যাওয়ায় এমনটা হচ্ছে। অথচ এটি বন্ধ করতে রেগুলেটরি বডি (নিয়ন্ত্রক সংস্থা) গঠনের কথা আইনে বলা আছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকলে আমাদের কাছে (আদালতে) আসতে হতো না। আমরা চাচ্ছি, এগুলো হোক। আমাদের সামনে আইন বাস্তবায়নের দৃশ্যমান কোনো উদাহরণ নাই।’
এরপর রিট আবেদনকারী আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘যে কোনো সময় যে কোনো খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে। কিন্তু আপনাকে নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের বিষয়ে আসা উচিৎ। আপনার রিট আবেদনের আরজি যথাযথ হয়নি।’ এরপর আদালত রিট আবেদনটি সংশোধন করে নিয়ে আসতে বলে মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখে।