আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের ১৬তম সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকালে। এরপর থেকে চলছে ভোট গণনা। প্রাথমিকভাবে আংশিক ফলাফল আসতে শুরু করে ১২ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল থেকে। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, নওয়াজ শরিফের পিএমএল (এন)-কে অনেকটাই পেছনে ফেলে দিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআইয়ে প্রার্থীরা। যদিও দলীয়ভাবে অংশ নিতে না পেলে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে লড়েছেন তারা।

শেষ খবর অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩৯টি আসনে গণনা শেষে নওয়াজ শরিফের পিএমএল জয় পেয়েছে ৪২ আসনে। বিলওয়াল ভুট্টোর পিপিপি পেয়েছে ৪৩টি আসন। এমকিউএম-পি পেয়েছে চারটি আসন। আর ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ৫৭ আসনে। আরও ১০০টিরও বেশি আসনে পিটিআই এগিয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো ।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয় (বৃহস্পতিবার ভোট হয়েছে ২৬৫টি আসনে)। এরমধ্যে কোনো দল বা জোটকে সরকার গঠন করতে ন্যূনতম ১৩৩টি আসন পেতে হবে।

এদিকে, পিটিআইকে দল হিসেবে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বেগুন প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ভোটে চমক দেখাচ্ছে ইমরানের দল।

অন্যদিকে, কারাগারে বন্দি রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সাবেক চেয়্যারম্যান ইমরান খান। শেষ পর্যন্ত যদি নির্বাচনে তার দল জয়ী হয়, তাহলে কী হবে? জেল থেকেই সরকার চালাবেন তিনি? নাকি জয়ের পর জেল থেকে ছাড়া পাবেন?

সম্প্রতি তোশাখানা ও অবৈধ বিবাহের মামলা দোষী সাবস্ত হয়ে ১৪ বছরের সাজা খাটছেন ইমরান খান। এছাড়া রাজনীতি থেকেও তাকে দশ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ২০৩৪ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এরপরও যদি ইমরান খানের দল সমর্থিত প্রার্থীরা বাজিমাত করতে পারেন, তাহলে তারা একত্রিতভাবে এক নতুন সরকার গঠন করতে পারবেন।

যদি ইমরান সমর্থিত প্রার্থীদের হাতে সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকে, সেই ক্ষেত্রে তারা অন্য দলের সঙ্গে জোট বেঁধেও সরকার গঠন করতে পারবে। তবে শুধু ইমরান একাই নন, তার প্রধান সহযোগীরাও জেলে কিংবা আত্মগোপন করে আছেন। পিটিআই দলের নেতৃত্ব এখন রয়েছেন ইমরানের আইনজীবী গোহ্বর আলি খান। ফলে ইমরানের বদলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেটাও বড় প্রশ্ন।

এই ক্ষেত্রে কিন্তু আইনের একটা ফাঁক রয়েছে। যে ফাঁক দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন ইমরান। তিনটি মামলায় ইমরান খানকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সাজা প্রত্যাহারের জন্য নতুন সরকার আদালতে যেতে পারে। ইমরান খানের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তাও প্রত্যাহার করার জন্য পাকিস্তানের নির্বাচনি সংস্থার কাছে আবেদনও করতে পারেন তারা। সেই ক্ষেত্রে ইমরান জেল থেকে বেরিয়ে এসে ফের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।