সারাবিশ্ব ডেস্ক : ইসরাইল ক্ষমতাসীন দলের ১২ মন্ত্রী এবং ১৫ আইনপ্রনেতারা রবিবার রাতে হাজার হাজার ডানপন্থী কর্মীদের অনুপ্রাণিত করতে তাদের সামনে উপিস্থিত হন। এসময় তারা গাজা উপত্যাকার কেন্দ্রস্থলে ইহুদি বসতি স্থাপন এবং হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনি জনগণকে উচ্ছেদকে উৎসাহিত করেন।

জেরুজালেম আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এ সমাবেশে বক্তৃতা দেয়ার সময় অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ, অতি জাতীয়তাবাদী ধর্মীয় জায়োনিজ পার্টির নেতারা নতুন বসতি তৈরির প্রশংসা করছিলেন। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।

এসময় তারা ঘোষণা করেন, ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা, আমরা বসতি স্থাপন করব এবং আমরা বিজয়ী হব।’

জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভি একজন চরম ডানপন্থী ওটজমা ইহুদি দলের নেতা। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং শ্রোতাদের উদ্দেশ্য করে এসময় তিনি বলেন, ‘গুশ কাতিফে বাড়ি ফেরার সময় হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের পর গাজায় ইরায়েলের বসতি ব্লকের নাম রাখা হয় এটি।

স্মোট্রিচ এবং বেন গভিরসহ ৬টি জোট এমকেএর সাথে সকলেই স্বাক্ষর করেছিলেন যাকে, বিজয় চুক্তি এবং বন্দোবস্তের পুনর্নবীকরণ নামে অভিহিত করা হয়েছিলো। এটি গাজা উপত্যাকায় ইহুদি বসতি গড়ে তুলার অঙ্গিকার পূর্ণব্যাক্ত করে।

তাদের পাশাপাশি, নেতানিয়াহুর ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির যোগাযোগ মন্ত্রী শ্লোমো কার্হিও গাজায় বসতি গড়ে তোলা এবং স্বেচ্ছায় দেশত্যাগকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

কিন্তু কারহি অন্য মন্ত্রীদের চেয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের উপর চাপিয়ে দেয়া হামাসের যুদ্ধের অর্থ হল গাজার বেসামরিক নাগরিকদের এখন বলপূর্বক বলা যেতে পারে যে, তারা এলাকা ছেড়ে যেন চলে যায়।

অন্যদিকে, ভিড়ের মধ্যে একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘শুধুমাত্র গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরটি করলেই ইসরায়েলে শান্তি আসবে।’

ওই সম্মেলনের প্রকাশিত ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সমালোচকরা বলেন, যুদ্ধের সময় সরকার ও জোটের মন্ত্রীরা আনন্দে নাচানাচি করছে, হাজার হাজার ইসরায়েলি বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, প্রায় প্রতিদিন সেনাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, ১৩৬ জন জিম্মি এখনও গাজায় হামাসের হাতে বন্দী রয়েছে।

নেতানিয়াহু নিজে সম্মেলনে যোগ দেননি কিন্তু শনিবার রাতে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি গাজা পুনর্বাসনের বিরোধিতা করেন এবং এটি কোন স্বীকৃত সরকারী নীতি ছিলো না।

একটি টেলিভিশন সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন প্রণেতা এবং মন্ত্রীদের তাদের মনের কথা বলার অনুমতি দেয়া হয়েছে, কিন্তু গাজা যুদ্ধোত্তর ইসরায়েলের নীতি সম্পূর্ণ নিরাপত্তা মন্ত্রীসভা দ্বারা নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অনুমোদিত এবং যে কোন সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারে।’

রবিবার রাতের সম্মেলনের আয়োজন করেছিল নাচালা সেটেলমেন্ট অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ এবং পশ্চিম তীরের সামারিয়া আঞ্চলিক কাউন্সিল এবং এর প্রধান ইয়োসি দাগান। ইভেন্টটির উদ্দেশ্য ছিল বর্তমান যুদ্ধ এবং উপত্যাকাটিতে নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা। একই সঙ্গে ইহুদি বসতি স্থাপন জোরদার করা।

ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ২১টি বসতি ভেঙে ফেলে, এবং তাদের ৮,০০০ বাসিন্দাকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। পরে ২০০৫ সালে গাজা থেকে একতরফাভাবে ইহুদি বসতি প্রত্যাহার করা হয়। হামাস সহিংসভাবে ফাতাহকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং ২০০৭ সালে গাজায় ক্ষমতা দখল করে।