মাদকের ফাঁদে তরুণ প্রজন্ম, কী করবে সমাজ
- আপডেট: ১০:০৮:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
- / ৭৫

স্বপন বিশ্বাস : বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় বর্তমানে যে কটি ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে, তার মধ্যে মাদকাসক্তি অন্যতম। বিশেষ করে তরুণ সমাজ দিন দিন এই সর্বনাশা মাদকের ভয়াবহ ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছে। এক সময় শুধু শহর এলাকায় মাদক সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে মফস্বল, গ্রাম-গঞ্জ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কিশোরগ্যাং কোথাও বাদ নেই।
মাদকের সহজলভ্যতা এবং অপসংস্কৃতির প্রভাবে যুবসমাজ এখন বিপথগামী হয়ে পড়ছে। ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, মদসহ নানা ধরনের নেশাদ্রব্যের ব্যাপক বিস্তার সমাজকে অস্থির করে তুলেছে। দেশের সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে মাদক চোরাচালান রোধের চেষ্টা করা হলেও তাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছে না।
logo
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
প্রচ্ছদ আজকের পত্রিকা ই-পেপার জাতীয় দেশ রাজনীতি আন্তর্জাতিক চাকরি মুক্তিযুদ্ধ খেলা মুক্তমত ক্যাম্পাস আমার আমি প্রবাসে বাংলার মুখ পরিবেশ বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ফ্যাশন শিল্প-সাহিত্য
‘নির্বাচনে যারা ভয় পায় তারা প্রেশার গ্রুপ হিসেবেই থাকুক’ ইইউ ও মেক্সিকোর ওপর ৩০ শতাংশ শুল্কারোপ করলেন ট্রাম্প ‘মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসাদের কেনার ক্ষমতা কোনো দলের হয়নি’ মিয়ানমারে বৌদ্ধ মঠে বিমান হামলায় নিহত ২৩ অতিদ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করুন : মির্জা ফখরুল মব জাস্টিসের ঘটনার সঙ্গে সরকারি দলের কোনও সম্পৃক্ততা নেই, বললেন রিজওয়ানা হাসান মবকারীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না কেন, প্রশ্ন তারেক রহমানের শ্যামলীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই, খুলে নিয়ে গেলো জামা-জুতাও গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে গত দেড় মাসে ৭৯৮ জনের মৃত্যু : জাতিসংঘ `মিটফোর্ডের ঘটনায় কিছু রাজনৈতিক দল ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে’ ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকেই মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা: ডিএমপি
/
আজকের পত্রিকা
/
সম্পাদকীয়
দৃষ্টিপাত
মাদকের অভিশাপ থেকে রক্ষা পাক তরুণ প্রজন্ম
অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী ২৬ জুন, ২০২৩
facebook sharing buttontwitter sharing buttonpinterest sharing buttonemail sharing buttonmessenger sharing buttonwhatsapp sharing buttonsharethis sharing button
মাদকের অভিশাপ থেকে রক্ষা পাক তরুণ প্রজন্ম
২৬ জুন মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘মানুষকে প্রাধ্যান্য দিয়ে কলঙ্ক ও বৈষম্য বন্ধ করুন, প্রতিরোধ জোরদার করুন’ অর্থাৎ মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের প্রতি বৈষম্য দূর করা ও সহানুভূতি দেখানো, যাতে করে তারা তাদের সমস্যাটির জন্য সহযোগিতা নিতে পারেন এবং সর্বোপরি প্রতিরোধ কার্যক্রম জোরদার করা যেতে পারে।
মাদকাসক্তি বর্তমান বিশ্বে ক্রমবর্ধমান সমস্যারগুলোর মধ্যে অন্যতম। মাদক শব্দটি শুনলে বেশির ভাগ মানুষই বিচলিত হয় বা ভয় পায়, আর মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের ঘৃণা ও নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে থাকে। আমাদের আশপাশে আত্মীয়-পরিজন কিংবা বন্ধুবান্ধব যে কারো মাদকাসক্তি সমস্যার কথা জানলে তাকে সবাই নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে। এমনকি তার পরিবারকে বিভিন্ন অপবাদমূলক ও বৈষম্যমূলক আচরণ করে। যেমন : সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারকে অপমান করা, যোগ্যতা থাকলেও কর্মক্ষেত্রে চাকরিচ্যুত করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়াসহ বিভিন্ন নেতিবাচক আচরণ করা হয়। ফলে একজন মাদকনির্ভরশীল ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিবারও অনেক সময় সমাজের এসব নেতিবাচক আচরণের ভয়ে মাদক সমস্যা সমাধানের জন্য কারো কাছে সহায়তা চাইতে লজ্জা ও সংকোচ করে থাকেন এবং এ সমস্যা সামনে নিয়ে আসতে চান না। ফলে সমস্যার তীব্রতা যখন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়, তখন মাদকনির্ভরশীল ব্যক্তির সমস্যার ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা সহায়তাসহ তাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করেন, আবার কখনো বিয়ে দেওয়া, তার ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারসহ বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মাদকাসক্তির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। বেকারত্ব, হতাশা, পারিবারিক অবহেলা, খারাপ বন্ধুর সঙ্গ, বিনোদনের অভাব এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয় তরুণদের মাদকের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সমাজব্যবস্থায় তরুণরা সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে মাদকের প্রচ্ছন্ন প্ররোচনার শিকার হচ্ছে।
মাদক কেবল একজন ব্যক্তিকে ধ্বংস করে দেয় না, তা পুরো পরিবারকে অশান্ত করে তোলে। সমাজে বাড়িয়ে দেয় অপরাধ প্রবণতা। ধর্ষণ, খুন, ছিনতাই, গ্যাং কালচার — এসব অপরাধের পেছনে বহু ক্ষেত্রে মাদকাসক্তির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। মাদকাসক্তরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলে।
শুধু প্রশাসনিক অভিযান ও আইন প্রয়োগ দিয়ে মাদকের ভয়াবহতা ঠেকানো যাবে না। দরকার সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা গড়ে তোলা। পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে একযোগে মাদকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তরুণদের মানসিক বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং সৃজনশীল বিনোদনের আয়োজন বাড়ানো প্রয়োজন।
স্কুল-কলেজে নিয়মিত মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক সেমিনার, র্যালি, আলোচনা সভা চালু করা জরুরি। পাশাপাশি পরিবারে সন্তানদের প্রতি সময় দেওয়া, বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং তাদের সমস্যা বোঝার সুযোগ করে দিতে হবে।
অপরদিকে সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালান রোধে কঠোর নজরদারি বাড়ানো দরকার। মাদকের সঙ্গে জড়িত চক্রগুলোকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশে আরও আধুনিক এবং মানসম্মত মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র এবং পুনর্বাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত।
মাদকের ভয়াবহতা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, এখন আর এটিকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে শুধু প্রশাসন নয়, সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তরুণ সমাজকে এই ভয়াবহতা থেকে বাঁচাতে হলে প্রয়োজন একটি সামাজিক আন্দোলন।
মাদক নয়, সুস্থ জীবন—এই বার্তা প্রতিটি ঘরে, মাদকের ফাঁদে তরুণ প্রজন্ম, কী করবে সমাজ।
বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় বর্তমানে যে কটি ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে, তার মধ্যে মাদকাসক্তি অন্যতম। বিশেষ করে তরুণ সমাজ দিন দিন এই সর্বনাশা মাদকের ভয়াবহ ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছে। এক সময় শুধু শহর এলাকায় মাদক সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে মফস্বল, গ্রাম-গঞ্জ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কিশোরগ্যাং কোথাও বাদ নেই। মাদকের সহজলভ্যতা এবং অপসংস্কৃতির প্রভাবে যুবসমাজ এখন বিপথগামী হয়ে পড়ছে। ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, মদসহ নানা ধরনের নেশাদ্রব্যের ব্যাপক বিস্তার সমাজকে অস্থির করে তুলেছে। দেশের সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে মাদক চোরাচালান রোধের চেষ্টা করা হলেও তাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মাদকাসক্তির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। বেকারত্ব, হতাশা, পারিবারিক অবহেলা, খারাপ বন্ধুর সঙ্গ, বিনোদনের অভাব এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয় তরুণদের মাদকের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সমাজব্যবস্থায় তরুণরা সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে মাদকের প্রচ্ছন্ন প্ররোচনার শিকার হচ্ছে।
মাদক কেবল একজন ব্যক্তিকে ধ্বংস করে দেয় না, তা পুরো পরিবারকে অশান্ত করে তোলে। সমাজে বাড়িয়ে দেয় অপরাধ প্রবণতা। ধর্ষণ, খুন, ছিনতাই, গ্যাং কালচার — এসব অপরাধের পেছনে বহু ক্ষেত্রে মাদকাসক্তির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। মাদকাসক্তরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলে।
শুধু প্রশাসনিক অভিযান ও আইন প্রয়োগ দিয়ে মাদকের ভয়াবহতা ঠেকানো যাবে না। দরকার সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা গড়ে তোলা। পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে একযোগে মাদকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তরুণদের মানসিক বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং সৃজনশীল বিনোদনের আয়োজন বাড়ানো প্রয়োজন।
স্কুল-কলেজে নিয়মিত মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক সেমিনার, র্যালি, আলোচনা সভা চালু করা জরুরি। পাশাপাশি পরিবারে সন্তানদের প্রতি সময় দেওয়া, বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং তাদের সমস্যা বোঝার সুযোগ করে দিতে হবে।
অপরদিকে সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালান রোধে কঠোর নজরদারি বাড়ানো দরকার। মাদকের সঙ্গে জড়িত চক্রগুলোকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশে আরও আধুনিক এবং মানসম্মত মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র এবং পুনর্বাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত।
মাদকের ভয়াবহতা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, এখন আর এটিকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে শুধু প্রশাসন নয়, সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তরুণ সমাজকে এই ভয়াবহতা থেকে বাঁচাতে হলে প্রয়োজন একটি সামাজিক আন্দোলন।
মাদক নয়, সুস্থ জীবন এই বার্তা প্রতিটি ঘরে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, পাড়া-মহল্লায় পৌঁছে দিতে হবে।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আলোকিত করতে হলে মাদক নামক এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে আমাদের আজই রুখে দাঁড়ানো দরকার। প্রতিষ্ঠানে, পাড়া-মহল্লায় পৌঁছে দিতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আলোকিত করতে হলে মাদক নামক এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে আমাদের আজই রুখে দাঁড়ানো দরকার।






















