আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত ত্রি-পক্ষীয় বৈঠকেও যুদ্ধবিরতিসহ কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি রাশিয়া-ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। মানবিক দিক বিবেচনা করে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ‘২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার আহ্বান জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। পূর্ব পরিকল্পনামাফিক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ল্যাভরভ।

বৃহস্পতিবার তুরস্কে বহুল প্রতিক্ষিত এক বৈঠকে মিলিত হয় রাশিয়া-ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

বৈঠকের শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে ল্যাভরভ ছাড়াও রাশিয়ায় আরও কেউ থাকতে পারে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, দিমিত্র ওপরের মন্তব্যের মাধ্যমে দিমিত্র রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইঙ্গিত করতে পারেন। কারণ তার অনুমতি ছাড়া ল্যাভরভের পক্ষে যুদ্ধবিরতির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ অসম্ভব।

দুমিত্র আরও জানান, ইউক্রেনে মানবিক সংকট সমাধানে অবিলম্বে ‘যুদ্ধবিরতি’ কার্যকর করা প্রয়োজন। দ্রুত সংকট নিরসনে উভয় দেশের মধ্যে আরও আলোচনা হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

একই সাংবাদিক সম্মেলনে ল্যাভরভ পরিকল্পনামাফিক হামলা চলবে বলে জানান। তার মতে, এটি একটি ‘বিশেষ অপারেশন’ এবং তা পূর্ব পরিকল্পনামাফিক চলবে।

অন্য কোন দেশে হামলার পরিকল্পনাও নাকচ করে দেন ল্যাভরভ। তিনি অভিযোগ করেন ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলছে পশ্চিমারা।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে জীবাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করেন। তার মতে, ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে গোপনে জীবাণু অস্ত্র তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে এ দাবি অস্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সম্পর্কে ল্যাভরভ বলেন, এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কারণ যুক্তরাষ্ট্র খুব গোপনে জীবাণু অস্ত্র তৈরি করছে। এ কারণে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে জীবাণু অস্ত্র সম্পর্কে কোনো তথ্য ছিল না।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরুর পর এটিই ছিল উভয় দেশের মধ্যে প্রথম শীর্ষপর্যায়ের বৈঠক। তুরস্কের পক্ষ থেকে উভয় দেশের প্রতি সংলাপের আহ্বান জানালে সে আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল ইউক্রেন-রাশিয়া।

এর আগে বেলারুশে উভয় দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো ছাড়াই সংলাপ শেষ হয়। ইউক্রেনের দাবি ছিল অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও রুশ সেনা প্রত্যাহার করা। কিন্তু ইউক্রেন ন্যাটোতে কখনো যোগদান করবে না তার নিশ্চয়তা চেয়েছিল রাশিয়া।

তুরস্কের মধ্যস্থতায় আলোচনা হলেও সংকট নিরসনের কোনো সম্ভাবনার কথা উভয় দেশের পক্ষ থেকেও আশা করা হয়নি। বৈঠক শুরুর পূর্বেও হতাশা প্রকাশ করেছিলেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার সে আশঙ্কায় বাস্তবে পরিণত হল।