আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নে একটি নির্মাণাধীন ব্রিজের কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন লাখো মানুষ।

ঝিকরগাছা হতে কায়েমকোলা (ভায়া শ্রীরামপুর রোড) সড়কে ঘোড়দা গ্রামে খালের উপর বাংলাদেশ সরকার এবং বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে ৩ কোটি ৪৮ লক্ষ ২৭ হাজার ১৭৫ টাকা ব্যায়ে ৩০ মিটার লম্বা একটি পি সি এস গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি যশোর সেন্ট্রাল রোড ঘোপ এর আই সি এল-এম এম টি দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্ট ভেঞ্চারে ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা আর গাফিলতির কারণে এই নির্মাণাধীন ব্রিজটি এখন লক্ষ জনতার ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, ব্রিজের দুপাশের দুটি পিলার নির্মাণ কাজ শেষ করে প্রায় ৬ মাসেরও অধিক সময় ধরে এভাবেই ফেলে রাখা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাউকে সেখানে পাওয়া গেলো না। ব্রিজের পশ্চিম পাশে মানুষ এবং ছোটো যান চলাচলের জন্য একটি কাঠের সাঁকো করে দেয়া হয়েছে কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সেটা এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঠ সরে যাওয়ায় প্রায়ই ছোটোখাটো দূর্ঘটনা ঘটছে। হেঁটে চলাচল করাটাও সেখানে অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

ইজিবাইক চালক সাহাবুব বলেন, আমি এই রাস্তায় নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করি। এই ব্রিজের সামনে আসলে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে কোনোরকমে সাঁকোর উপর দিয়ে ইজিবাইক পার করে আবারও যাত্রী তুলি। আমার মতো সবাই এই ব্রিজ নিয়ে খুবই সমস্যার মধ্যে আছে।

কায়েমকোলা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, আগে ঝিকরগাছা বাজার থেকে মালামাল কিনে শ্রীরামপুরের মধ্যে দিয়ে দোকানে আনতাম। কিন্তু এই ব্রিজের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে ১০ কিলোমিটার ঘুরে মোহাম্মদপুর মোড় দিয়ে মাল আনতে হচ্ছে। এর ফলে খরচও যেমন বেড়েছে তেমনি ঝামেলাও বেড়েছে।

মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই ব্রিজ নিয়ে বলতে বলতে আমরা হাঁফিয়ে গিয়েছি। মানুষজন যে কি কষ্টের মধ্যে আছে সেটা বলে বোঝানো যাবেনা। কিন্তু কেউ এর সুরাহা করতে পারছে না।

ব্রিজের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আই সি এল এর মালিক তপন বাবুকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চুড়ান্ত নোটিশ প্রদান করেছি। ২৮ দিনের মধ্যে কাজ শুরু না করলে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন কাউকে নির্মাণ আদেশ প্রদান করে ব্রিজের কাজ শেষ করা হবে।

এই আসনের সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন বলেন, ব্রিজ নিয়ে জনভোগান্তির কথা আমি শুনেছি। ব্রিজের নির্মাণ কাজ যাতে দ্রুত শেষ হয় সে ব্যাপারে আমি যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। এছাড়াও ঝিকরগাছা উপজেলা প্রকৌশলীকে কাঠের ভাঙা সেতুর বদলে মাটি ভরাট করে অস্থায়ী রাস্তা নির্মাণ করে দিতে বলেছি যাতে করে আপাতত মানুষ সহজে যাতায়াত করতে পারে।