নিজস্ব প্রতিবেদক : রাত পোহালেই ঈদ। এরই মধ্যে আজই কোরবানির পশু বিক্রির ধুম লাগার কথা থাকলেও সকাল থেকেই বৃষ্টির কারণে বিক্রিতে ভাটা পড়েছে বলে জানাচ্ছেন পশু ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তবে বিকেলের পর খেকে ভাল দাম পাবেন বলে আশা করছেন তারা।

বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলী পশু হাট ঘুরে দেখা গেছে ঝড়-বৃষ্টির কারণে হাটে ক্রেতা কম। অধিকাংশ বিক্রেতাই বসে বসে সময় পার করছেন। কেউ কেউ আবার বৃষ্টির মধ্যেই চেয়ারে বসে ঘুমিয়ে নিচ্ছেন। অধিকাংশ ব্যাবসায়ী বাজারে কাউকে প্রবেশ করতে দেখলেই হাকডাক ছেড়ে ক্রেতা ডাকছেন।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে তিনটি গরু নিয়ে এসেছেন ইসমাইল শেখ। তিনি বলেন, গতকালও মোটামুটি ক্রেতা ছিল বাজারে। কিন্তু আজ সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে খুব একটা ক্রেতা নেই। বড়লোকদের কাছে গরু বিক্রি করে একটু লাভের আশায় আমরা ঢাকা আসি। কিন্তু এই বৃষ্টি কাদার মধ্যে কেউ গরু কিনতে আসছে না। শেষ পর্যন্ত গরু ফেরত নিয়ে যেতে হবে নাকি বলতে পারছি না।

অন্য এক বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, যে গরুর দাম গতকালও আড়াই লাখ টাকা বলেছে আজ সেই গরুর দাম বলছে দুই লাখ টাকা। বছরের পর বছর কষ্ট করে খরচ করে গরু পুষেছি আর সেই কষ্টের দাম না হয় নাই পেলাম। কিন্তু সঠিক দাম যে পাবো তাও পাচ্ছি না। এভাবে দাম হলে তো গরু এবার বাড়িতে ফেরত নিয়ে যেতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা থেকে গরু নিয়ে এসেছেন মো. শাহজাহান আলী। গরুর নাম রেখেছেন বাহাদুর। প্রায় ২৫ মণ মাংস হবে বলে জানান তিনি। দাম চাইছেন সাড়ে আট লাখ টাকা। কিন্তু সর্বোচ্চ দাম উঠেছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, সাড়ে তিন বছর ধরে গরু পুষছি। সাড়ে তিন বছরে একটা গরুর তো আর কম খাওয়াতে হয়নি। সেই ছোট থেকে খাওয়াতে খাওয়াতে আজ এত বড় করতে হয়েছে। একটা গরুকে যদি হাতির সাইজের বানাতে হয় তাহলে তাকে কত টাকার খাওয়ানো লাগে?

তিনি আরও বলেন, প্রতি কেজি ভূসি এখনকার বর্তমান বাজারে ৬০ টাকা দরে কেনা লাগে। একটা গরুর পেছনে সারাদিন একজন মানুষ না থাকলে এত বড় একটা গরু পোষা যায় না। সব সময় একটা গরুর সব দিক খেয়াল রাখা লাগে।

এত সময় আর পরিশ্রম দিয়ে একটা গরু পোষার পর আশানুরুপ দাম না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন শাহজাহান আলী।