বিশেষ সংবাদ | তারিখঃ মে ৪, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2512 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশব্যাপী চলছে চিনি নিয়ে ছিনিমিনি। ঈদ পরবর্তী চিনির বাজারে শুরু হয়েছে বিশৃঙ্খলা। আগের মতোই বেশিরভাগ দোকান থেকেই উধাও হয়ে গেছে প্যাকেটজাত চিনি। খোলা চিনি মিললেও কিনতে হচ্ছে রেকর্ড দাম কেজি ১৪০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে খোলা চিনির দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা। ঈদের আগে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ছিল সর্বোচ্চ ১২৫ টাকা। যদিও গত মাসে সরকার প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১০৪ টাকা বেঁধে দিয়েছিল।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে দেখা গেছে, এক মাসে চিনির দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ। আর এক বছরে বেড়েছে ৬২ শতাংশের বেশি।
এদিকে বাজারজুড়ে চিনির দামে এ কারসাজি জেনেও চুপচাপ চিনি উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকরা। চুপচাপ সরকারি সংস্থাগুলোও। তবে চিনির দাম রেকর্ড পরিমাণ বাড়ায় চরম অস্বস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারা।
বাজারে রেকর্ড মূল্যে চিনি বিক্রি হওয়ার কথা সরাসরি স্বীকার না করলেও গতকাল বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় চিনি আমদানি নিয়ে তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ সংকটে চিনির বাজারে এই অস্থিরতা চলছে। অন্যদিকে মিল মালিকেরা বলছেন, দেশে চিনির কোনো সংকট নেই। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি। এ অবস্থায় চিনিকলের মালিকেরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এক চিঠির মাধ্যমে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। এর মধ্যেই চিনির দাম প্রতি কেজিতে রেকর্ড বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরা বাজারে মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। আর খোলা চিনি মিললেও ক্রেতাকে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১২০ থেকে ১২৫ টাকার মধ্যে ছিল।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মফিজুল হক বলেন, ‘কোম্পানিগুলো জানিয়েছে চিনির উৎপাদন নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন প্রতি টন অপরিশোধিত দাম দাঁড়িয়েছে ৬৭০ ডলারে, যা আগে থেকে প্রায় ১০০ ডলার বেশি। তাই আমদানি কমেছে।’
চিনি পরিশোধনকারীরা জানান, চিনির পরিশোধন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। একইসঙ্গে ডলারের ঘাটতির কারণে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা না পাওয়ায় অপরিশোধিত চিনি আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি মণ চিনি এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৭৫০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে তা বেড়ে এখন ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টনের বেশি চিনি মজুত রয়েছে এবং চিনির কোনো ঘাটতি নেই।