নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রায় ২৫ বছর আগে মার্কিন বিদ্যুৎ কোম্পানির দেশটির আদালতে করা বাংলাদেশ সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের এক মামলা হঠাৎ জেগে উঠেছে। তবে সেসময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের দায় কেন বর্তমান সরকার নেবে সেই প্রশ্ন উঠেছে।

১৯৯৭ সালে মার্কিন বিদ্যুৎ কোম্পানি স্মিথ কোজেনারেশনের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল তখন ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ সরকার। চুক্তি হওয়ার দুই বছর পর অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে সেটি বাতিল করা হয়। ওই বছরই বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৩১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে স্মিথ কোজেনারেশন।

সালিশি ওই মামলায় গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে।

আমেরিকাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ল-৩৬০ এক প্রতিবেদনে জানায়, বৃহস্পতিবার ইউএস ডিস্ট্রিক্ট বিচারক কার্ল জে নিকোলস স্মিথ মার্কিন মার্শাল সার্ভিসকে ওই দুজন ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন।

অবশ্য এই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জারি করা পরোয়ানা স্থগিত করার তথ্য দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। ওই সময় জড়িত থাকা বাংলাদেশ সরকারের ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার কথাও বলেছেন সদ্য রাষ্ট্রদূত হওয়া এই সাংবাদিক।

এমন এক সময়ে ওই পরোয়ানা জারি করা হয়, যখন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটন ডিসি সফর করছেন। ওই সফরকারী প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

এদিকে বাংলাদেশ মার্কিন আদালতে আপিল করে বলেছে, যে দুজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তারা উচ্চ পর্যায়ের বাংলাদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা। তারা যুক্তরাষ্ট্রে ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলা থেকে দায়মুক্ত। বিচারক নিকোলসের আদালতের রায় এখতিয়ারবহির্ভূত ও গ্রেপ্তারের প্রয়োগ অযোগ্য।

ফেসবুকে মুশফিকুল ফজল আনসারী লিখেছেন- ‘১৯৯৭ সালে স্মিথ কোজেনারেশন তৎকালীন বাংলাদেশের সরকারের সাথে একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে একটি বার্জ-মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য অনুমতি প্রদান করেছিল সরকার। এই মামলায় দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর ওয়াশিংটন ডিসি সার্কিট কোর্ট অনেকটা এখতিয়ার বহির্ভূত একটি রায় প্রদান করে, যা আজ শুক্রবার আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়।’

‘যদিও বিষয়টির সাময়িক অবসান ঘটেছে তবে লুটেরা সরকারের দায় রক্তস্নাত বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারের সেসময়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে এবং বিষয়টি বর্তমান সরকারের নজরে না এনে ধামাচাপাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’