নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২২ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় এবার গড় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ৯টি সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারে সবচেয়ে এগিয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ডের ৯৫ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। সবচেয়ে কম পাস করেছে পরীক্ষার সময় বন্যার কবলে পড়া সিলেট বিভাগ। এই বিভাগের পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

তবে চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। তবে গতবারের মতো এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। এবার ছাত্রদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং ছাত্রীদের ৮৭ দশমিক ৭১ শতাংশ।

সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এরপর প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন।

পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক দিয়ে এবছরও এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। চলতি বছর ৮৭ দশমিক ৭১ শতাংশ ছাত্রী মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে, যেখানে ছাত্রদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে বড় ব্যবধানে।

জিপিএ-৫ পাওয়া ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ২১ হাজার ১৫৬ ছাত্র; আর ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্রী। সেই হিসেবে ২৭ হাজার ২৯০ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের তথ্য মতে, এবার ছাত্র পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ছাত্রী পাসের হার ৮৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ৮১ দশমিক ১৬ শতাংশ। যা গত বছরের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ কম। গত বছর পাশের হার ছিল ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। এবার পাশের হারে ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। ছাত্র পাশের হার ৮০ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং ছাত্রী পাশের হার ৮১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

সিলেট বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজর ৫৬৫ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলে ৩ হাজার ২৫৪ জন এবং মেয়ে ৪ হাজার ৩১১ জন। গত বছরের চেয়ে এবারে জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ২ হাজার ৭৩১ জন বেড়েছে।

বিকল্প চিত্র দেখা গেছে কুমিল্লা বোর্ডে। এই বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে তিনটি বিভাগে গড় পাসের হার ৯১.২৮ শতাংশ। ফলাফলে ছেলেরা এগিয়ে রয়েছে। ছেলেদের পাসের হার ৯১.৫৬ শতাংশ এবং মেয়েদের পাসের হার ৯১ দশমিক ০৬ শতাংশ।

গত পাঁচ বছর ধরেই মাধ্যমিকে পাসের হারের দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। গত বছর ছাত্রীদের পাসের হার যেখানে ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ছিল; ছাত্রদের মধ্যে পাস করেছিল ৯২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গতবার জিপিএ ৫ পাওয়া ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭৯ হাজার ৭৬২ জন ছিল ছাত্র; আর ১ লাখ ৩ হাজার ৫৭৮ জন ছাত্রী।

এ বছর পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৯ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৩ জন, পাস করেছে ৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৬ জন। অন্যদিকে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন ছাত্রীর মধ্যে ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।

চলতি বছর ৯টি সাধারণ বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে ৯৭ দশমিক ০৯ শতাংশ ছাত্র ও ৯৭ দশমিক ০৮ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে। মানবিকে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ছাত্র ও ৮২ দশমিক ৫৫ শতাংশ ছাত্রী এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ ছাত্র ও ৯২ দশমিক ৯২ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে।

এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় ১৬ লাখ। সবমিলিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে দুই লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্রী এবং এক লাখ ২১ হাজার ১৫৬ জন ছাত্র জিপিএ ৫ পেয়েছে।

এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখের বেশি। তিন হাজার ৭৯০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মোট ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থী।