আন্তর্জাতিক ডেস্ক :আদালত অবমাননার দায়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের ছয় মাসের জেল হতে পারে। সম্প্রতি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের হাই কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি শাইক উসমানি এই তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার (২২ আগস্ট) পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিচারপতি শাইক ওসমানি বলেন, দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি (ইমরান খান) আগামী পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতাও হারাবেন।

তবে ইমরান খানের আদালত অবমাননার মামলাটি অন্যান্য আদালত অবমাননার মামলার চেয়ে ভিন্ন বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, ইমরান একজন বিচারকের নাম উল্লেখ করেছেন এবং ওই বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। উসমানি বলেছেন, কোনও আদালত যদি কারও বিরুদ্ধে রায় দেন, তাহলে তিনি রায় নিয়ে সমালোচনা করতে পারেন, বিচারককে নিয়ে নয়। সাবেক এই বিচারপতি বলেন, পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান নিজেকে বিপদের মাঝে দেখতে পাচ্ছেন। ইমরান খান উত্তেজনার বশে বড় একটি ভুল করে ফেলেছেন। বিচারপতি জানান , ইমরান খান ক্ষমা চাইলেও রক্ষা পাবেন বলে মনে হয় না।

এছাড়া এর আগেই জিও নিউজের একই অনুষ্ঠানে পিপিপির নেতা কামার জামান কাইরাও ইমরান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিচার বিভাগীয় একজন কর্মকর্তাকে হুমকির দায়ে ইমরান খানের বিরুদ্ধে আদালতের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আইজি এবং ডিআইজির পদ কি ম্যাজিস্ট্রেটের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ? পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা তালাল চৌধুরী বলেন, ইমরান খানকে গ্রেপ্তারই সরকারের নিছক কোনও ইচ্ছা নয়, তবে এটা দায়িত্ব। সরকারি কর্মকর্তাদের রক্ষা করাও সরকারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি। পিএমএল-এনের এই নেতা বলেন, সরকার যখন খুশি ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে পারে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত শনিবার ইসলামাবাদের সমাবেশে এক অতিরিক্ত দায়রা জজ এবং জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ইমরান খানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের সাত নম্বর ধারা অনুযায়ী ইসলামাবাদের মারগাল্লা থানায় ইমরানের বিরুদ্ধে এই এফআইআর দায়ের করেছেন ম্যাজিস্ট্রেট আলী জাভেদ।মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, পিটিআই চেয়ারম্যান অতিরিক্ত দায়রা জজ জেবা চৌধুরী এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়েছেন ইমরান খান; যা এক ধরনের সন্ত্রাসী তৎপরতা। এই হুমকির প্রধান লক্ষ্য ছিল পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিচার বিভাগকে তাদের আইনি দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া।এফআইআরে বলা হয়েছে, ইমরান খানের বক্তৃতার উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মাঝে অশান্তি ও সন্ত্রাস ছড়ানো। সূত্রঃ জিও নিউজ।