স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা | তারিখঃ আগস্ট ১৫, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2682 বার
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক : তেজপাতা নামটি শুনলেই খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বলে কিছু মনে হয় না। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কোনো রান্না করলে তেজপাতা ছাড়া চলেই না।
হ্যাঁ বন্ধুরা। আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে যাচ্ছি তেজপাতার উপকারিতা নিয়ে। এই পাতার আগে যেমন তেজ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, ঠিক সেভাবেই এই পাতার তেজ কিন্তু কম নয়। যে কোনো ধরনের সুস্বাদু খাবারে তেজপাতা ছাড়া কল্পনা করা যায় না।
তেজ পাতার পরিচিতিঃ
তেজপাতা সর্বপ্রথম গ্রিক দেশে পাওয়া যায়। সর্বপ্রথম গ্রিকরাই তেজপাতা কে বিভিন্ন ঔষধি পাতা হিসাবে ব্যবহার করে।
এরপর থেকে তেজপাতা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এবং তেজ পাতার বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার শুরু হয়। তেজপাতা একটি সুগন্ধিযুক্ত ঔষধিপাতা। বিভিন্ন ভেষজ উপায়ে তেজপাতা ব্যবহার করা যায়।
শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমাতে তেজপাতার উপকারিতাঃ
যখন শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়, সারা শরীর ব্যথা হয়ে যায় এবং তা কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হওয়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী হয়ে থাকে। শরীর থেকে ইউরিক এসিডের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসতে তেজপাতা অনেক বেশি উপকারী। তেজপাতা সিদ্ধ করে সিদ্ধ করা পানি যদি আপনি সকালে বা রাতে খেতে পারেন, তাহলে আপনি ইউরিক এসিডের সমস্যা থেকে ভালো থাকতে পারবেন।
মস্তিষ্কের স্নায়ুতান্ত্রিক দুর্বলতা কমাতে তেজপাতার উপকারিতাঃ
সারাদিন কাজ করার পরে যখন মন মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, অর্থাৎ স্নায়ুতান্ত্রিক দুর্বলতা দেখা যায়, তখন যদি আপনি তেজপাতা দিয়ে এক কাপ চা পান করেন, সাথে সাথে আপনার স্নায়ুতান্ত্রিক দুর্বলতা কমে গিয়ে আপনার মনে একটা সতস্ফুর্ত ভাব চলে আসবে।
শুষ্ক কাশি কমাতে তেজপাতার উপকারিতাঃ
যাদের সাইনোসাইটিসের সমস্যা আছে, একটু ধূলাবালি লাগলে খুসখুসানি কাশি শুরু হয়, অথবা সর্দি-কাশি সব সময় লেগে থাকে, তারা যদি সকালে এবং বিকেলে তেজপাতা দিয়ে চা পান করে, তাহলে তাদের এই খুসখুসানি কাশি থেকে অনেকখানি উপকার পাবে।
মাইগ্রেনের সমস্যায় তেজপাতার উপকারিতাঃ
যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে অর্থাৎ যারা একটু রোদে গেলে প্রচুর মাথা ব্যাথা করে, বা বেশ কিছুক্ষন এক দিকে তাকিয়ে থাকলে মাথার এক পাশ প্রচন্ড ব্যাথা করে, তারা এই সমস্যা নিরাময় করার জন্য তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ তেজপাতায় থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আমাদের মাইগ্রেনের সমস্যা সারাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজ করে।
এই ক্ষেত্রে যখনই আপনার মাইগ্রেনের ব্যাথা উঠবে অবশ্যই তেজপাতা দিয়ে সিদ্ধ করা এক কাপ গরম পানি সাথে সাথে পান করুন। ইনস্ট্যান্ট মাইগ্রেনের ব্যাথা চলে যাবে।
যেকোনো জায়গায় ক্ষত সারাতে তেজপাতার উপকারিতাঃ
তেজপাতার মধ্যে এন্টিকব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় এটি শরীরের যেকোনো ক্ষত তাড়াতাড়ি সারিয়ে ফেলতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই শরীরের কোন জায়গায় ক্ষত হলে যদি দীর্ঘদিন এই ক্ষত থেকে যায়, তাহলে তেজপাতা কচলিয়ে তার গুড়ো ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দিন। সাথে সাথে উপকার পাবেন।
সতর্কতাঃ তেজপাতার মধ্যে কিছু উপাদান অতিরিক্ত মাত্রায় থাকার কারণে এটি শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের থেকে দূরে রাখতে বলা হয়েছে। যারা সদ্য মা হয়েছেন ডাক্তারেরা তাদেরকেও বেশ কিছুদিন তেজপাতা না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
সুতরাং বন্ধুরা, তেজপাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদেরকে যা জানালাম চেষ্টা করবেন নিজেদের উপকারী দিকগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য। আর অবশ্যই শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে তেজপাতা খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।