খেলাধুলা | তারিখঃ নভেম্বর ১৩, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 6208 বার
খেলাধুলা ডেস্ক : গ্রুপ পর্বে বিদায়ের শঙ্কা থেকে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রেখেছিল পাকিস্তান। ঠিক পঞ্চাশ ওভারের ‘৯২ আসরের মতো। প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ডকে পেয়ে যাওয়ায় ৩০ বছর আগের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখাতে চেয়েছিলেন বাবর আজমরা। কিন্তু ইতিহাস ফিরে আসেনি! বরং ৫ উইকেটের সহজ জয়ে পাকিস্তানের হৃদয় ভেঙে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড।
মেলবোর্নে বৃষ্টির সম্ভবনা ছিল প্রবল। দু’দিন আগে থেকে বৃষ্টির কথা বলা হলেও ম্যাচের দিন আকাশ কেবল মুখ ভার করেই ছিল। টস হেরে শুরুতে ব্যাটিং পাওয়ায় বাবর আজমের মুখও কিছুটা ভার হয়ে যায়। মেলবোর্ন মোটামুটি রানের উইকেট হলেও ধুঁকে ধুঁকে ব্যাটিং করে পাকিস্তান ৮ উইকেটে ১৩৭ রানে আটকে যায়। জবাব দিতে নেমে ইংল্যান্ডও চাপে পড়ে গিয়েছিল। ওপেনার অ্যালেক্স হেলস ১ রান করে শাহিন শাহ’র প্রথম ওভারেই ফিরে যান। তিনে নামা ফিল সল্ট ১০ রানের ইনিংস খেলেন।
অধিনায়ক ও দলের সেরা ব্যাটিং ভরসা জস বাটলার দলকে আশা দিলেও ১৭ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২৬ রান তুলে সাজঘরে ফেরেন। ৫.৩ ওভারে ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা বিপদে ইংল্যান্ড। পেস অলরাউন্ডার বেন স্টোকস ৪৯ বলে পাঁচটি চার ও এক ছক্কায় ৫২ রানের দারুণ ইনিংস খেলে ওই চাপ সামলে দলকে এক ওভার হাতে থাকতে জয় এনে দিয়েছেন। হ্যারি ব্রুক ২৩ বলে ২০ রানের ছোট ইনিংস খেললেও গুরুত্বপূর্ণ একটি জুটি দিয়েছেন। স্পিন অলরাউন্ডার মঈন আলী ১৩ বলে তিন চারে ১৯ রানের আত্মবিশ্বাসী ইনিংস খেলে দলের জয়ের পথ সহজ করেন। দেশকে দ্বিতীয় টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দেন। এর আগে পাকিস্তান ধীরে খেলে ওপেনিং জুটিতে ৪.২ ওভারে ২৯ রান তোলে। মোহাম্মদ রিজওয়ান ফিরে যান ১৪ বলে ১৫ রান করে। সাহসী ব্যাটিং করে মনোযোগ কাড়া মোহাম্মদ হারিস ব্যর্থ হন। তিনি ৮ করে আউট হন। দলের পক্ষে ২৮ বলে ৩২ রানের ধীর গতির ইনিংস খেলেন অধিনায়ক বাবর আজম। তিনি দুটি চার মারেন। চারে নামা শান মাসুদ ২৮ বলে খেলেন সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস। দুটি চার ও একটি ছক্কা মারা এই ব্যাটার দলের প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। শাদাব খান করেন ১২ বলে ২০ রান। পাকিস্তানের পরের ব্যাটাররা আরও ব্যর্থ ছিলেন। ইফতিখার আহমেদ ৬ বলে শূন্য করে ফিরে যান। মোহাম্মদ নওয়াজ ৭ বলে করেন ৫ রান। টেলেন্ডার ওয়াসিম জুনিয়রের ব্যাট থেকে ৮ বলে আসে ৪ রান। শেষ ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান তুলতে পারে পাকিস্তান। ম্যাচের পরেই বিশ্লেষণে কিউই কিংবদন্তি স্টিফেন ফ্লেমিং জানিয়ে দেন, স্লগের ওই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা কঠিন হবে পাকিস্তানের। হয়েছেও তাই। স্লগের মতো ইংল্যান্ডের ইনিংসের ১৬তম ওভারে আরও একটি ক্ষতির শিকার হয়েছে পাকিস্তান। নিজের তৃতীয় ওভার করতে এসে প্রথম বলেই ইনজুরিতে পড়েন শাহিন। পার্ট টাইম বোলার ইফতিখার এসে পাঁচ বলে দেন ১৩ রান। সঙ্গে শাহিনের ইনজুরিতে স্বস্তি আসে ইংল্যান্ড শিবিরে। সব মিলিয়ে ২০১৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের ‘খলনায়ক’ বেন স্টোকস এবার জয়ের নায়ক। ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া স্যাম কারেনও নায়ক। সংক্ষিপ্ত স্কোর: পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৩৭/৮ (রিজওয়ান ১৫, বাবর ৩২, হারিস ৮, শান ৩৮, ইফতিখার ০, শাদাব ২০, নাওয়াজ ৫, ওয়াসিম ৪, শাহিন ৫*, হারিস ১*; স্টোকস ৪-০-৩২-১, ওকস ৩-০-২৬-০, কারান ৪-০-১২-৩, রশিদ ৪-১-২২-২, জর্ডান ৪-০-২৭-২, লিভিংস্টোন ১-০-১৬-০)। ইংল্যান্ড: ১৯ ওভারে ১৩৮/৫ (বাটলার ২৬, হেলস ১, সল্ট ১০, স্টোকস ৫২*, ব্রুক ২০, মইন ১৯, লিভিংস্টোন ১*; শাহিন ২.১-০-১৩-১, নাসিম ৪-০-৩০-০, হারিস ৪-০-২৩-২, শাদাব ৪-০-২০-১, ওয়াসিম ৪-০-৩৮-১, ইফতিখার ০.৫-০-১৩-০)।