গ্রামের সংবাদ ডেস্ক: বন্ধুত্ব এমনই এক সম্পর্ক- যা এক জনকে আরেকজনের সঙ্গে মনের বন্ধনে আবদ্ধ করে। সমমনা লোকেরাই সফলভাবে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারেন। এটি আমাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে গড়ে উঠতে পারে। সাধারণত একই বয়স, চিন্তাধারা এবং একই মেজাজের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে খানিকটা আলাদা করে মূল্যায়ন করার জন্যই প্রতিবছর আগস্ট মাসের প্রথম রবিবারে বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস।

কীভাবে এলো
বন্ধু বা বন্ধুত্ব দিবস ঘোষণার উৎপত্তি বা কারণটা ঠিক কী, তা সঠিকভাবে বলা মুশকিল। তবে তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা অর্থাৎ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, বিশৃঙ্খলা ও হিংস্রতা মানুষের মধ্যে অনেকটাই বন্ধ‍ুর অভাব তৈরি করেছিলো বলে অনেকের অভিমত। ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধু দিবস পালন করার ধারণা এসেছিল বলেই মনে করেন অনেকে।

এক সূত্র অনুযায়ী, বন্ধু দিবসের শুরু হয়েছিলো অনেক আগে। ১৯১৯ সালে আগস্টের প্রথম রবিবার বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে কার্ড, ফুল ও উপহার বিনিময় করতো। ১৯৩০ সালে জয়েস হল প্রতিষ্ঠিত হলমার্ক কার্ড বন্ধু দিবস পালনের রীতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছিলো।

আবার জানা যায়, ১৯৩৫ সালে আমেরিকান সরকার এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। তার প্রতিবাদে পরদিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। এরপর থেকে জীবনের নানা ক্ষেত্রে বন্ধুদের অবদানের প্রতি সম্মান জানাতে আমেরিকান কংগ্রেসে ১৯৩৫ সালে আগস্টের প্রথম রবিবারকে বন্ধু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই থেকেই বন্ধুত্ব দিবস শিগগিরই খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস-এ রুপ লাভ করে।

১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই, “World Friendship Crusade” এর প্রতিষ্ঠাতা “Dr. Ramón Artemio Bracho” বন্ধুদের সঙ্গে প্যারাগুয়ের পুয়ের্তো পিনাসকোতে (নদীর তীরে একটি শহর যা উত্তর আসুনসিওন থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে অবস্থিত) এক নৈশভোজে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সে রাতেই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা পায় এবং ৩০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধু দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠায়। প্রায় ৫৩ বছর পর, ২০১১ সালের ২৭ জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩০ জুলাইকে ‘বিশ্ব বন্ধু দিবস’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

যদিও এই বন্ধু দিবস বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন তারিখে পালন করা হয়। তবে এখনও বাংলাদেশ-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগষ্টের প্রথম রোববারই বন্ধু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আবার কোনও কোনো দেশে ৮ এপ্রিল বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।