অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি ॥ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে যশোরের অভয়নগরে উপকারভোগী এক পরিবারের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার টাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। বিক্রি করা ঘরের দলিল ক্রেতার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটেছে।

উপকারভোগী তরিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগমের নামে বরাদ্দকৃত ঘরের দলিল ওই প্রকল্পের পাশে বসবাসকারী মৃত এহিয়া মোল্যার ছেলে হাসানুর মোল্যার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

সরেজমিনে ২ জুন দুপুরে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে গিয়ে উপকারভোগী তরিকুল ইসলামকে না পেলেও তার স্ত্রী খাদিজা বেগমকে পাওয়া যায়। এ সময় তিনি ঘর বিক্রি ও দলিল হস্তান্তরের ব্যাপারে বলেন, ‘কিছুদিন আগে প্রতিবেশী হাসানুর মোল্যার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। নির্ধারিত সময়ে ওই টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। আগামী দুই মাসের মধ্যে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে ঘর হাসানুরের হয়ে যাবে মর্মে স্ট্যাম্পে লেখা ও স্বাক্ষর করা হয়েছে। স্ট্যাম্প ও ঘরের দলিল হাসানুরের কাছে রয়েছে।’

হাসানুর মোল্যাকে বাড়িতে না পেলেও তার স্ত্রী রেক্সোনা বেগমকে পাওয়া যায়। এ সময় তিনি বলেন, ‘তরিকুলের স্ত্রী খাদিজার বিপদের সময় আমার স্বামী দুই কিস্তিতে ৯০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিল। দুই মাসের মধ্যে ওই টাকা পরিশোধ করার অঙ্গিকার করেছিল তারা। টাকা পরিশোধ করতে না পেরে ঘরের দলিল ও স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়েছে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন মুঠোফোনে জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ নিয়ে না থাকা, ক্রয়, বিক্রয় ও ভাড়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ করে থাকেন. তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। শ্রীধরপুরের ঘটনাটি তদন্ত করা হবে। প্রমাণিত হলে ওই উপকারভোগীর বরাদ্দ বাতিল করে অন্য ভূমি ও গৃহহীনকে ঘরটি দেওয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে জানা যায়, উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় পাশাপাশি পাঁচটি ঘর নির্মাণ করা হয়। দুই শতক জমির উপর একটি ঘর নির্মাণে ব্যয় করা হয় এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে উপকারভোগী পরিবারের মাঝে ঘর ও জমির মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।