ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, জনগনের ভোটাধিকার, গনতন্ত্র ও বাক ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আমরা যে লড়াই শুরু করেছি তা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। এর বাইরে আর কোন পথ খোলা নেই। দেশে একটি জবাবদিহী ও জনপ্রতিনিধিত্ব সরকার গঠনের মাধ্যমে জাতির বুকে চেপে বসা দুঃশাসনের অবসান ঘটানো বিএনপির প্রধান লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনে অতীতের মতো দেশের গনমাধ্যম ও সাংবাদিকদের পাশে চাই।

তিনি বলেন, আমরা এক হিরক রাজার দেশে বসবাস করছি। মানুষ কথা বলতে পারছে না। সাংবাদিকরা লিখতে পারছে না। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখলে এমনকি লাইক কমেন্ট করলেও কালো আইন তৈরী করে নিপীড়ন করা হচ্ছে। বছরের পর বছর হাসিনার নিষ্ঠুর কারাগারে বন্দি রাখা হচ্ছে। অধ্যাপক ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।

আগামী ২৮ মে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষ্যে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট এস এম মশিয়ূর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এড এম এ মজিদ, জেলা বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কমিশনার এড দবির হোসেন, দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, একেএম ওয়াজেদ, জাহিদুজ্জামান মনা, আক্তারুজ্জামান, আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু, আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, মহেশপুরের দবির উদ্দীন ও মেহেদী হাসান রনি উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন আরো বলেন, দেশের মানুষ আজ দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতির আগুনে পুড়ছে। অথচ এই সরকারের কোন মাথা ব্যাধা নেই। তারা দেশের সাধরণ মানুষের কথা চিন্তা করে না। কারণ তারা দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় এসেছে। এই দুঃসহ অবস্থা থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চাই। হাসিনা ও তার দোসররা দেশে যে ভয়াবহ সংকট তৈরী করেছে তার জন্য আমরা একাত্তর সালে যুদ্ধ করিনি। তিনি বলেন, বিএনপি কোন আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটে যাবে না। গনতন্ত্র আন্দোলনে আমরা শুধু ডান বাম বুঝি না। সকল দল মতের উর্ধ্বে দেশের সব শ্রেনী পেশার মানুষের সহায়তা নিয়ে বিএনপি এগিয়ে যেতে চাই। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি কোন ইস্যু তৈরী করেনি। হাসিনা সরকারই একটার পর একটা সংকট ও ইস্যু তৈরী করে দিয়েছে জনগনের সামনে। আমরা সরকারকে বার বার সাবধান করছি। সরকার আমাদের কথা আমলে না নিয়ে দেশ শ্রীলংকার মতো হবে বলেছি। অধ্যাপক ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি গনতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তাই এই দলের জেলা সম্মেলন হচ্ছে সম্পুর্ন গনতান্ত্রিক পন্থায়। সিলেট ও দিনাজপুর বিএনপির কমিটি সেভাবেই হয়েছে। তিনি বলেন আগামী ২৮ মে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সম্মেলনে ১০১০ জন ভোটার গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে তারা নেতা নির্বাচিত করবেন। বিএনপি তৃণমুল থেকে নেতৃত্ব তুলে আনতে চাই। সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জাহিদ আরো বলেন, সিইসি বলেছেন ইভিএম ত্রæট মুক্ত না। তাই বিএনপি ইভিএম পদ্ধতিতে নয়, ব্যালটের মাধ্যমে ভোটে বিশ্বাসী এবং আগামী নির্বাচন ব্যালটেই হবে ইনশাল্লাহ। কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, গনতান্ত্রিক আন্দোলনে দেশের সাংবাদিক সমাজকে আমরা সব সময় পাশে পেয়েছি। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সম্মেলনে বিএনপির মাহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখবেন। তিনি ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জেলার সর্বস্তরের মানুষের সহায়তা কামনা করে বলেন, বিএনপি সাধরণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব ফিরিয়ে দিতে বদ্ধ পরিকর। সেই লড়াইয়ে ঝিনাইদহ জেলাবাসিকে তিনি পাশে চান। বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সম্মেলন স্থল পরিদর্শন করতে সদর উপজেলার ডাকবাংলা আব্দুর রউফ কলেজ মাঠ পরিদর্শন করেন।