খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ মে ২৪, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2825 বার
আব্দুল্লাহ আল-মামুন, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের শার্শার গৃহবধূ রেহেনা হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড সহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামী খলিলুর রহমান পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
মঙ্গলবার যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক সামছুল হক এ আদেশ দেন। এসময় স্পেশাল পিপি সাজ্জাম মোস্তফা রাজা উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী শাহ আলম। ঘাতক স্বামী খলিলুর রহমান বেনাপোল পুটখালী গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে। নিহত রহিমা খাতুন শার্শার ইছাপুর গ্রামের সাখায়াত উল্লাহর মেয়ে।
আদালত সূত্র জানায়, রেহেনার সাথে খলিলুরের বিয়ে হয় ১৯৯৯ সালে। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। ২০০৯ সালের শুরুতে খলিলুর জোর পূর্বক রেহেনার আপন ছোট বোন মিনা খাতুনকে বিয়ে করে বাড়িতে আনেন। যা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি শুরু। এরপর রেহেনার পরিবার মিনা খাতুনকে খলিলুরের কাছ থেকে নিয়ে আরেক স্থানে বিয়ে দেন। এতে করে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন খলিলুর। এরপর থেকেই রেহেনার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান রেহেনা। এরপর খলিলুর প্রায় রেহেনাদের বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। মাঝে মধ্যে রেহেনার সাথে কথা বার্তাও বলেন কিন্তু, রেহেনাদের বাড়িতে যান না তিনি।
সর্বশেষ ২০০৯ সালের ১৪ জুন দুপুর ১২ টায় খলিলুর ও তার কয়েক বন্ধু রেহেনাদের বাড়িতে যান। এরপর বাগআঁচড়া সিনেমা হলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রেহেনাকে নিয়ে যান। এরপর রেহেনার আর বাড়ি ফিরে আসেননি। বিভিন্ন স্থানে খোজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি তার পরিবার। পরের দিন সকাল সাতটায় ইছাপুরের একটি মাঠ থেকে রেহেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় রেহেনার শরীরে হত্যার একাধিক চিহ্ন পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রেহেনার মা আবেদা খাতুন শার্শা থানায় খলিলুরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই গোলাম মোস্তাফা। তদন্তে উঠে আসে রেহেনাকে মাারপিট ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন খলিলুর। তিনি খলিলুরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।