সানজিদা আক্তার সান্তনা, যশোর অফিস : যশোরে পিতার হাতে পুত্র খুন হয়েছে। পুত্র রুহুল আমিনকে (১৪) বৈদ্যুতিক সক ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে ওই পিতার বিরুদ্ধে। যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চাঁদপাড়ার পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পিতা নুরুল ইসলামকে এলাকাবাসী ধরে পুলিশের কাছে সোর্পদ করেছে। নিহত রুহুল আমিনের শরীরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের চিহ্নও রয়েছে। পুলিশ সোমবার নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পিতা নুরুল ইসলামকে আটক দেখিয়েছে পুলিশ। ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করে নিজেকে ফাঁসি চেয়েছেন তিনি।

আটক নুরুল পুলিশের কাছে ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তবে নুরুল ইসলামের মাঝে মধ্যে মানসিক সমস্যা হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

চাঁদপাড়ার ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন জানান, নুরুল ইসলামের দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে আছে। আর তার স্ত্রী সান্তনা পিতার বাড়িতে গেছেন। ছোট ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসায় থাকে। রাতে নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে লেদ শ্রমিক রুহুল আমিন (১৪) বাড়িতে ছিলেন। রাতে কোনো এক সময় রুহুল আমিনকে হত্যা করে ঘরের মধ্যে রেখে ফেলে রাখে তার পিতা। ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয়রা সোমবার ভোরে তার বাড়িতে আসে। এ সময় শ্বাসরোধে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তার ছেলেকে হত্যা করেছে বলে জানায়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।

এরপর কোতয়ালি থানার এসআই ফজলুর রহমান ও সদরের চাঁদপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের এস আই আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর থেকে রুহুল আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান। একইসাথে পিতা নুরুল ইসলামকে আটক করেন।

হত্যাকাণ্ডের পর ‘মানসিক ভারসাম্য’ হারানো অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নিজের জমি বিক্রি করে ৪১ লাখ টাকা পরিবারের জন্য দিয়েছি। আমি এখন আর পরিশ্রম করতে পারি না। স্ত্রী সন্তান ছেলে মেয়ে আমাকে আর চায়না। এরা সবাই মিলে আমাকে সবসময় ঠিকমত খেতে দিতো না। উঠতে বসতে তারা আমাকে অমানসিক নির্যাতন চালাতো। তাই প্রথমে আমার ছেলেকে হত্যা না করে কোনো উপায় ছিলো না।’

ঘটনাস্থলে গিয়ে কোতয়ালি থানার এসআই ফজলুর রহমান জানান, আটক নুরুল ইসলাম তার ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছেন। নিহতের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্টের আলামত রয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত আর কিছু বলা যাবে না।

ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সংবাদ শুনে আমি গিয়েছিলাম। তিনি বলেন, এটি নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে নিহতের পিতা।’

যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, পারিবারিক কলেহের জের ধরে নুরুল ইসলাম তার ছেলে রুহুল আমিনকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক পর্যায়ে জেনেছি। বিস্তারিত পরে জানা যাবে প্রকৃত পক্ষে কি হয়েছে