খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, ঝিনাইদহ | তারিখঃ এপ্রিল ২৪, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 793 বার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের গোডাউন থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৭ বস্তা মুল খাতা ও লুজ সীট গায়েব হয়ে গেছে। এই খাতা চুরির সাথে জড়িত সিন্ডিকেট চিহ্নিত হলেও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড বা কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। বরং এই খাতা চুরি নিয়ে সে সময়কার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল দক্ষতার সঙ্গে ধামাচাপা দিতে সক্ষম হন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন অনুষ্ঠিত ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখার বোর্ড পরীক্ষার পর অবশিষ্ট মুল খাতা ও লুজ সীট কলেজের গোডাউনে ছিল। এই খাতা ছাড়াও কয়েক বস্তা বই কলেজের দুই কর্মচারির সহায়তায় ২০১৯ সালের রমজান মাসে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখার সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের সরকারী অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম মিল্টন নিজের বাড়ি নিয়ে যান।
কলেজের অফিস সহায়ক শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি কেবল স্যারের আদেশ মেনে খাতাগুলো তার বাড়িতে পৌছে দেন। তারপরে আর কি হয়েছে তা আমি বলতে পারবো না। তিনি আরো বলেন, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বেচে যাওয়া খাতার সঙ্গে বোর্ডের বইও ছিল ওই বস্তায়। সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের আরেক অফিস সহায়ক আমির হোসেন জানান, খাতা নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি গেটে বাধা দেন। এ সময় শরিফুল ইসলাম তাকে জানায় খাতাগুলো সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের সরকারী অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম মিল্টনের নির্দেশে তার বাসায় তিনি নিয়ে যাচ্ছেন। আমির হোসেন খাতাগুলো গুনে ভ্যান ছেড়ে দেন। তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে সে সময় কলেজে হৈ চৈ হলেও খাতা চুরির কাহিনী ধামাচাপা পড়ে যায়।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের সরকারী অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম মিল্টন বহু কেলেংকারীর হোতা। কলেজে ২০০০ সালের ১৯ অক্টোবর ও ২০০১ সালের ১৮ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভায় তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ প্রমানিত হলে মিল্টনের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কলেজ সরকারী হওয়ার পরও তিনি একই ধরণের অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই ছাত্র অভিযোগ করেন, মার্কসীটের ফটোকপি দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন মিল্টন স্যার। এসাইনমেন্ট জমা দিতেও টাকা নেন তিনি।
এ ব্যাপারে সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, খাতা চুরির বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তদন্ত করে সে সময় কি রিপোর্ট দিয়েছিল তা তার মনে নেই। এ বিষয়ে তিনি কলেজের হেড ক্লার্ক রজব আলীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। হেডক্লার্ক রজব আলী খাতা গয়েব হওয়া বা তদন্ত কমিটির বিষয়ে বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।
বিষয়টি নিয়ে রকিবুল ইসলাম মিল্টন অভিযোগ খন্ডন করে বলেন, তার বিরুদ্ধে কলেজের একটি চক্র মিথ্যা তথ্য নিয়ে ভাবমুর্তি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন কলেজ থেকে তিনি তার বিভাগের কিছু প্র্যাকটিক্যল খাতা ও বই নিয়ে গেছেন। সেগুলো কোন ভাবেই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের খাতা ছিল না। কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান খাতা গায়েবের বিষয়ে বলেন, আমি সে সময় কলেজে অনুপস্থিত ছিলাম। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর কলেজে যোগদানের পর বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাটি সত্য হলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।