বিল্লাল হোসেন, ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের বনবিভাগের ভালুকা উপজেলার উথুরা রেঞ্জে কর্মরত কর্মকর্তা হারুন রশীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, উথুরা রেঞ্জের অধীনে বনাঞ্চল থেকে চুরি হওয়া গাছ উদ্ধার করে অফিসে আনা দেখানো মাত্র। কাগজ পত্রে উদ্ধারকৃত গাছ নথিভূক্ত না করে উদ্ধারকৃত গাছ চোর চক্রের সাথে দফারফা করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এমন অসংখ্য অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে এলাকায়। উল্লেখ উথুরা রেঞ্জের কর্মকর্তা হারুন রশীদ বনভূমি রক্ষার নামে চালাচ্ছে রমরমা বাণিজ্য। বনাঞ্চল এলাকায় বসবাসকৃত দখলীয় ভূমিতে অবস্থিত বাঁশের ঝাড় স্থানীয় লোকজনেরা সাংসারিক চাহিদার প্রয়োজনে বিক্রয় করলে ওই বাঁশ জব্দ করেন। পরবর্তীতে বাঁশকে পুঁজি করে বন সংরক্ষণকারী কর্মকতা উথুরা রেঞ্জ কর্মকতা হারুন রশীদ লক্ষাধিক টাকা বাণিজ্য করে নেন। এছাড়াও বনাঞ্চলে অবস্থিত করাতকল লাইসেন্সকে পুজি করে করাতকল মালিকদের কাছ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার। এমনকি কিছুদিন পূর্বে উথুরাধীন খলাবাড়ির এক পল্লী ডাক্তার হাশেম এর বাড়ি সংলগ্ন রান্না ঘরের পিছেনে একটি দেশি শীলকড়ই গাছ নিজ সাংসারিক চাহিদার কারণে স্থানীয় এক কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রয় করেন । শীলকড়ই গাছটি কাটার পর কাঠ ব্যবসায়ী গাড়ি যোগে রাস্তায় ওঠা মাত্রই গাড়ি ভর্তি কাঠসহ বেপারীকে আটক করে অফিসে নিয়ে ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখে রেঞ্জ কর্মকর্তা । পরে স্থানীয় নেতা কর্মী ও রেঞ্জ কর্মকর্তা হারন রশিদসহ আলোচনার মধ্য দিয়ে রফাদফা করে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বেপারীকে ছেড়ে দেন এবং আশ্বাস দেন তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকাদ্দমা হবে না। এভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে বনাঞ্চলের লোকজনের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা। অথচ এক শ্রেণীর কুচক্রী মহল প্রতিনিয়ত দখল করছেন বনভূমি, উজাড় হচ্ছে গজারি শালবন ও আকাশমনি গাছ। বনভূমি রক্ষার নামে করে যাচ্ছে প্রতিনিয়তই বাণিজ্য। নিজ স্বার্থ সিদ্ধি করতে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কে রেখেছে । তিনি হুমকি দিয়ে বলেন যদি কারো কাছে মুখ খুলিস তাহলে দু’চারটা মামলা দিয়ে দিবো। এমনকি কথায় কথয় বলে আমার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর সাথে থাকেন এরূপ হুমকি দিয়ে বেড়ান এলাকাজুড়ে। এছাড়াও গত ১৪ মার্চ সন্ধ্যা রাতে উথুরাধীন কৌয়াদী গ্রাম থেকে দুই গাড়ি গজারি শাল ও আকাশমনি গাছসহ একজন কাঠ ব্যবসায়ীকে আটক করেন।
পরে ওই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আদায় করে গাছ ও ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে সুত্রটি জানায় । ব্যবসায়ী বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাছাড়া গত ৫ এপ্রিল উথুরা রেঞ্জের অধীনের ধলিকুরী মৌজাকৃত পাবলিক রোপণকৃত কাঁঠাল গাছ ও ২/৩ পদে গাছ স্থানীয় দুই ব্যবসায়ীর গাছ জব্দ করে অফিসে আনা হয় এবং ওই গাছেরও ব্যবসায়ীদের সাথে দফারফা চলছে এক গোপন তথ্য পাওয়া গেছে।
সরজমিন ঘুরে ও কথা বলে জানা যায়, বনাঞ্চলের লোকজন জানান, আদৌ এধরনে দুর্নীতিবাজ রেঞ্জ কর্মকতা এ পর্যন্ত কোন কর্মকর্তা যোগদান করেনি।

উথুরা রেঞ্জ কর্মকতা হারুন রশীদ সাহেবের বক্তব্য নেওয়া জন্য মোবাইলে কল করিলে রিসিভ করিয়া সংবাদকর্মীর পরিচয় পাইয়া উত্তরে বলে আমার কোনো বক্তব্য নেই ।
উথুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম জানান, এ দুর্নীতিবাজ রেঞ্জ কর্মকতা বন রক্ষার নামে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী ও এলাকার লোকজনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। এরূপ অবস্থা চলতে থাকলে এই রেঞ্জে বনাঞ্চল বলতে কিছু থাকবে না।