নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামে নিজ এলাকায় দলমত নির্বিশেষে ধনী ব্যবসায়ীদের তালিকা করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায়সহ পাঁচ অভিযোগে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরীকে শোকজ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে এই শোকজ নোটিশ গিয়াস কাদের বরাবর পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে, ওমানে বসবাসরত সিআইপি ব্যবসায়ী ইয়াসিনের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা চাঁদা দাবি এবং চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ওই ব্যবসায়ীর রাউজানের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তাকে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তবে চিঠির বিষয়ে বিএনপির এই নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গিয়াস কাদেরকে পাঠানো শোকজ চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনার বিরুদ্ধে আবেদনের প্রেক্ষিতে দল কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নিম্নলিখিত অভিযোগসমূহ উল্লেখ করা হলো-

১. এলাকায় দলমত নির্বিশেষে ধনী ব্যবসায়ীর তালিকা তৈরি করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায়। ২. ওমানে বসবাসরত ব্যবসায়ী ইয়াসিনের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা চাঁদা দাবি এবং দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া। ৩. ব্যবসায়ী মো. ফোরকানের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসী দ্বারা শারীরিক নির্যাতন, বিদেশে অবস্থানরত রাউজানের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঢালাও চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করা। ৪. স্বঘোষিত কমিটি ঘোষনা করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আপনি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে বলেন, ‘রাউজান কমিটি গঠন করতে কারো প্রয়োজন নেই, আমার এলাকা আমি করব।’ এ ধরনের বক্তব্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) মহোদয়ের নেতৃত্বের প্রতি চরম অনাস্থা ও ধৃষ্টতা। ৫. দীর্ঘ ৬ বছর বিদেশে থেকে নতুন সরকারের শুরুতে দেশে এসে দেশ-বিদেশের সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে রাউজানে আপনি অস্থিরতা ও মারাত্মক আতঙ্ক তৈরি করেছেন-যা রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুন্ডসহ উত্তরের অন্যান্য নির্বাচনি এলাকায় বিরুপ প্রভাব ফেলছে।

কেন সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে ওই শোকজের চিঠিতে। এতে বলা হয়েছে, ‘আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার যথাযথ কারণ দর্শিয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

এদিকে একইদিন গিয়াস কাদের চৌধুরীর ছেলে সামির কাদের চৌধুরীকে পৃথক আরেকটি কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যা আগামী তিন দিনের ভেতরে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। ওই চিঠিতে, উত্তর চট্টগ্রামজুড়ে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ নানাকাণ্ড তুলে ধরা হয়।

প্রসঙ্গত, গিয়াস কাদের চৌধুরী চট্টগ্রাম-৬ আসন থেকে ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে বিএনপিতে যোগ দেন এবং সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৭ আসন থেকে এমপি হন। তিনি ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।