খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ এপ্রিল ১০, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 1622 বার
সানজিদা আক্তার সান্তনা, যশোর অফিস : যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা মল্লিক পাড়ায় ননী ফল নার্সারীর মালিক খন্দকার কবীর হোসেনের বিরুদ্ধে আরও প্রতারণার তথ্য মিলেছে। তিনি ওয়াজ মাহফিলে মসজিদের ছাদ নির্মাণের জন্য রড দেয়ার ওয়াদা করেও দেননি। আবার চুড়ামনকাটি বাজারের ইসমাইলের কাছ থেকে যৌন উত্তেজনার ওষুধ কিনে নিজের প্রোডাক্ট বলে চড়া দামে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মসজিদের রড দেয়া নিয়ে প্রতারণায় কবীরের প্রতি মসজিদ কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আর একজনের ওষুধ নিজের বলে বিক্রির ঘটনা ফাঁস হওয়ায় কবীরের কাছে ওষুধ বিক্রি বন্ধ করেছেন ইসমাইল হোসেন।
ছাতিয়ানতলা মল্লিকপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবীর উজ্জল জানান, গত ৩ মার্চ মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। খন্দকার কবীর হোসেন ওয়াজ মাহফিল পরিচালনা কমিটির সহ সভাপতি ছিলেন। মাহফিলে কবীর হোসেন ঘোষণা দেন মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের জন্য তিনি ১২শ’কেজি রড দান করবেন।
হুমায়ন কবীর উজ্জল আরও জানান, কবীরের ঘোষণা দেয়ার পর ছাদের সেন্টারিংয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়। পরে রড আনতে গেলে দিতে পারবেন বলে জানিয়ে দেন। কবীরের এই ধরণের প্রতারণায় মসজিদ কমিটির সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
এদিকে, চুড়ামনকাটি বাজারের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন জানান, তিনি বিভিন্ন গাছের বাকল দিয়ে নানা রোগের ওষুধ তৈরি করেন। মল্লিকপাড়ার নার্সারি কবীর হোসেন তার ও পরিবারের সদস্যদের শারীরিক সমস্যার কথা বলে এক সাথে অনেক ওষুধ নিয়ে যান। ইসমাইল আরও জানান, পরে তিনি জানতে পারেন তার কাছ থেকে নাম মাত্র মূল্যে ওষুধ কিনে কবীর হোসেন নিজের তৈরি ওষুধ বলে চড়া দামে বিক্রি করেন। এই ধরণের প্রতারণা জানার পর কবীরের কাছে সকল প্রকার ওষুধ বিক্রি বন্ধ করেছেন তিনি।
সূত্র জানায়, ননীফল নার্সারির আড়ালে কবীরের জমজমাট চিকিৎসা প্রতারণা চালিয়ে আসছে। তিনি রাতের আধারে নার্সারির পাশের একটি টিন শেডের মধ্যে নিম গাছের পাতা, জিনসেং পাওডার, ননী ফল গাছের ছাল ও বাকল জ্বালিয়ে যৌন উত্তেজক ওষুধ মিশিয়ে বড়ি ও হালুয়া তৈরি করে। রাতেই সেগুলো বোতলে ভরা হয়। যখন রোগীর চাপ বেড়ে যায় তখন মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইসমাইলের কাছ থেকে ওষুধ কিনে নিয়ে যান। সুযোগ বুঝে ক্রেতাদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করেন।
চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোফজ্জেল হোসেন জানান, তার জানা মতে খন্দকার কবীর হোসেন একজন মহা প্রতারক। তিনি যৌন ও ক্যান্সার চিকিৎসার নামে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন।
চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন জানান, ইসমাইলের কাছ থেকে ওষুধ কিনে কবীর হোসেন নিজের প্রোডাক্ট বলে বিক্রি করেন। প্রশাসনের কাছে কবীরের অপচিকিৎসার বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি করেন তিনি