সারাবিশ্ব ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা ও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যেই ইরানে হামলা করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। শনিবার ভোররাত থেকে রাজধানী তেহরান এবং তার আশপাশের এলাকাগুলো মুর্হুমুহু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে বলে জানিয়েছে ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো।

গত ০১ অক্টোবর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে যে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল তেহরান, তার জবাব দিতে ইসরায়েল পাল্টা হামলা করবে— এমন আশঙ্কা অবশ্য ০১ অক্টোবরের হামলার পর থেকেই ঘুরপাক খাচ্ছিল আন্তর্জাতিক ও মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে। সেই আশঙ্কা সত্য হলো। আইডিএফের বরাত দিয়ে ইসরায়েলের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলা পরিচালনা করছে আইডিএফের বিমান বাহিনী।

হামলা শুরুর পর আইডিএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইসরায়েল রাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে গত বেশ কয়েক মাস ধরে ইরানের ক্ষমতাসীন এবং তাদের অনুগত গোষ্ঠীগুলো যেভাবে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তার জবাব দিতেই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এই পাল্টা হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি, কারণ আমাদের দায়িত্ব ইসরায়েলকে রক্ষা করা।”

ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দুই মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ ও এবিসি নিউজ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, কেবল ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাবে বিমান বাহিনী। দেশটির পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেল খনিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে না।

এদিকে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, তেহরানের পশ্চিম এবং দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো সামরিক স্থাপনা ও ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তেহরানের চারপাশ এবং রাজধানীর নিকটবর্তী শহর কারাজের বাসিন্দারা শনিবার ভোর থেকে একের পর এক শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ পাচ্ছেন।

তবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের দাবি, আকস্মিক এই হামলা জনগণের মধ্যে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। সাধারণ লোকজনের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে গণমাধ্যমে। তেহরানের প্রধান বিমানবন্দর ইমাম খোমেনি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের কিছু ভিডিও প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রয়ত্ব টেলিভিশন চ্যানেল। সেখানে দেখানো হয়েছে, সাধারণ যাত্রীরা অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিকভাবে বিমানবন্দরে চলাচল করছেন।

আরেক আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোলুশ্যনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) কয়েকটি ঘাঁটি ও স্থাপনায় আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা, তবে সেসব ঘাঁটি-স্থাপানার বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।